তুলশীগঙ্গার তীরে বসেছে ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির মেলা
১৫ জুন ২০১৯ ১৮:২৭
জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় তুলশীগঙ্গা নদীর তীরে বসেছে ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির মেলা। প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার বিকেলে এই মেলা বসে।
জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় দুইশো বছর আগে সন্যাসী পূজার তিথিতে সন্যাসতলী মন্দিরের পাশে দুই দিনব্যাপী এই মেলার রেওয়াজ শুরু হয়েছিল।
নানা রঙের ঘুড়ি এই মেলার মূল আকর্ষণ। যে কারণে প্রচলিত হয় ঘুড়ির মেলা নামে। এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের অংশ হলেও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিবছর এই মেলা হয়ে ওঠে সার্বজনীন মেলবন্ধনের ক্ষেত্র।
ক্ষেতলাল উপজেলা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন ঘুড়ির মেলায়। মেলায় বসে রকমারি মিষ্টির দোকান। খই-মুড়কি, তিলের খাজা, কটকটি, শাহী জিলাপি, দাঁতভাঙা, খাগড়াই-বাতাসা, হাওয়াই মিঠাই, নারকেলের নাড়ু, রেশমি চুড়ি, চুলের ফিতা, তাল পাতার সেপাই, কুলা, পিঁড়ি, ঝুড়ি- এ সবই মেলে ঘুড়ির মেলায়।
প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী, মেলার দুইদিন মেয়ে জামাই এবং স্বজনদের আপ্যায়ন চলে কয়েক গ্রামেজুড়ে।
জিয়াপুর গ্রাম থেকে শনিবার (১৫ জুন) মেলায় এসেছেন হারুনুর রশীদ এবং মাতাপুর গ্রাম থেকে এসেছেন মতিউর রহমান। তারা বলেন, আমাদের বাবা-দাদা এই মেলায় আসতেন। সে পরম্পরায় আমরাও আসি।
বগুড়ার গাবতলী উপজলা থেকে এসেছেন অমিত মন্ডল। তিনি বলেন, শুধু ঘুড়ি কিনতেই প্রতিবছর বগুড়া থেকে আমরা জয়পুরহাট আসি।
মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি মন্টু চন্দ্র বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব হলেও আমরা হিন্দু-মুসলিম মিলে মেলার আয়োজন করি। সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এই মেলায় আসেন।
ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, সন্যাসতলী মেলার সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে। প্রতিবছর এই মেলার আয়োজন করা হয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মেলায় আসেন। এটা আমাদের কাছে একটা বড় উৎসব।
সারাবাংলা/এটি