পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় ডিএসই-সিএসই
১৬ জুন ২০১৯ ১৬:৩৮
ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্চ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। রোববার (১৬ জুন) বাজেট পরবর্তী পৃথক সংবাদ সম্মেলনে ডিএসই ও সিএসসি’র পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরে জমি, ফ্ল্যাট, ইকোনমিক জোনে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এই অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারেও যেন বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত বাজেটকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকেই পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট বলেও অভিহিত করা হয়।
রোববার দুপুরে ডিএসই‘র কার্য্যলয়ে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএম মাজেদুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ডিএসই‘র চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল হাসেম, পরিচালক রকিবুর রহমান, শরীফ আতাউর রহমান এবং মিনহাজ মান্নান ইমন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএসই এমডি কেএম মাজেদুর রহমান প্রস্তাবিত বাজেটকে পুঁজিবাজারবান্ধব অভিহিত করে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুয়ায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে একগুচ্ছ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশার প্রাপ্তি ঘটেছে।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ আয়ের করমুক্ত সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এতে করে পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে এবং বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে নিবাসী ও অনিবাসী সব কোম্পানির ক্ষেত্রে লভ্যাংশ আয়ের ওপর দ্বৈতকর প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ আয়ের ওপর একাধিকবার কর আরোপ করা হবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল হাসেম এবং পরিচালক রকিবুর রহমান প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্টক ডিভিডেন্ডের পরিবর্তে ক্যাশ ডিভিডেন্ড উৎসাহিত করতে স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ হারে নতুন করে কর আরোপকে স্বাগত জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা তালিকাভুক্ত কোম্পানির রিটেইনড আর্নিংস বা রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি হলে বর্ধিত রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপকেও স্বাগত জানান।
রকিবুর রহমান বলেন, ‘কোনো কোনো কোম্পানি বিনিয়োগকারীকে বঞ্চিত করার জন্য সঠিকভাবে লভ্যাংশ না দিয়ে লভ্যাংশের টাকা কোম্পানির রিজার্ভ হিসাবে রেখে দেয়। অথচ কোম্পানি ওই অর্থ কোম্পানির উৎপাদন বাড়ানো কিংবা বর্ধিত করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে না। এতে করে কোম্পানির উদ্যেক্তারা লাভবান হলে বঞ্চিত হয় কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা।’
এছাড়া ডিএসইর সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর মিমিউচুয়ালাইুজেশন পরবর্তী আরও তিন বছর কর অব্যাহতি সুযোগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবর্হিভূত কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়।
অন্যদিকে, সকালে সিএসইর ঢাকা অফিসে আয়োজিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন করেন সিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি গোলাম ফারুক। তিনি প্রস্তাবিত বাজেটক স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বাজেটে করজালের আওতা বৃদ্ধি হুন্ডির পরিবর্তে বৈধ পথে প্রবাসী আয় প্রেরণে প্রণোদনা এবং চার স্তর বিশিষ্ট নতুন মুল্যসংযোজন কর বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের কথা উল্লেখ রয়েছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর জোর প্রদান করা হয়েছে। যা পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করছি।’
সিএসইর এমডি গোলাম ফারুক বলেন, ‘চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ গত ২ এপ্রিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রস্তাবিত বাজেটে ৮টি প্রস্তাবনা বিবেচনা করার জন্য উপস্থাপন করে। এর মধ্যে মাত্র করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা প্রস্তাবটি আংশিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। সিএসই এর প্রস্তাবনার বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এসময় তিনি সব প্রকার বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয়কে করমুক্ত রাখা এবং জিরো কূপন বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয়ের করমুক্ত সুবিধা ব্যাংক, ইনস্যুরেন্স ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব করদাতাকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানান।
সারাবাংলা/জিএস/এমও