ইসির বাড়তি খরচের পক্ষে মতিয়া
১৬ জুন ২০১৯ ১৭:৪৫
সংসদ ভবন থেকে: সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেছেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি খরচ করেছে নির্বাচন কমিশন। তাদের এই খরচ প্রাপ্যই ছিল। তাই সবাই মিলে অনুমোদন দেব। ’
রোববার (১৬ জুন) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে বাজেট ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। ৬২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরমধ্যে ৩৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বেশি খরচ করেছে আর ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খরচ করতে পারেনি। সম্পূরক বাজেটের আকার হয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।’
তিনি জানান, বেশি খরচ করা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে শীর্ষ ১০ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হচ্ছে- নির্বাচন কমিশন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক বিভাগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ এবং জননিরাপত্তা বিভাগ।
মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, ‘মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা। কিন্তু তারা খরচ করেছে ৪ হাজার ৩৪৩ কোটি ৪৩ দশমিক ১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই হাজার ৪৪৭ দশমিক ৮৮ কোটি টাকা বেশি খরচ করেছে। দেশের নির্বাচনী কর্মযজ্ঞ হিসাব করলে দেখা যায় তাদের খরচ অমূলক না। তারা ইউপি নির্বাচন থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সমাপ্ত করেছে। এই নির্বাচনকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কৌশলী ও সহনশীল নেতৃত্বের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। ’
বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানার বক্তব্যের সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আজকে অনেকে বলছেন সংসদ অবৈধ। অবৈধ হলে আসলেন কেন? কেউ চরণ ধরে সাদাসাধি করেছে এমন তো নয়। সংসদে আসছেন সেটা গণতন্ত্রের জন্য ভাল কথা। কিন্তু সংসদকে অবৈধও বলবেন আবার শপথও নেবেন; এমপি হিসেবে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। আপনাদের বক্তব্যে শুনে মনে হয়- ‘জলে নামব, জল তো ছুঁব না। আমার মাথার বেণী শুকিয়ে রবে চুলতো ভিজাব না। ’
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ৬৬ দশমিক ২১ কোটি টাকা। তারা খরচ করেছে ৩০ হাজার ৬৭০ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ হাজার ৬০৪ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা বেশি খরচ করেছে। সমস্ত উস্কানি উপেক্ষা করে শান্তিরক্ষী বাহিনী কাজ করছে। তাদের প্রয়োজনে আরও অর্থ দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ১৫৩ দশকি ১৯ কোটি টাকা। তারা খরচ করেছে ৩০ হাজার ৬৯৬ দশিক ৩ কোাট। অর্থাৎ ১ হাজার ৫৪২ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা বেশি খরচ হয়েছে। রাস্তাঘাট তো আর ফু দিয়ে হবে না। কাজেই এটা টাকা দরকার ছিল আমরা সবাই এটা টাকা অনুমোদন দেব।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এক অর্থনীতিবিদের বক্তব্যের সমালোচনা করে মতিয়া বলেন, ‘দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে- উনি এসব দেখেন না। উনি কাল্পনিক চৌকাঠে আসমানে বিচরণ করলে করুন। দেশের মানুষের আয় বেড়েছে, দেশ ভালো চলছে- কে কী বলল, তাতে আসে যায় না।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম