দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএসএমএমইউতে আন্দোলন চালানোর ঘোষণা
১৬ জুন ২০১৯ ১৭:৫৩
ঢাকা: দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি প্রত্যাশী চিকিৎসকরা।
রোববার (১৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে আয়োজিত মানববন্ধনে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা এ ঘোষণা দেন।
মানববন্ধনে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন। এছাড়া নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার পদত্যাগ দাবি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চিকিৎসকদের নামে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মানবন্ধনে বিভিন্ন শ্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়ান চিকিৎসকরা। তাদের প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন ভিসির কাছে জবাব চাই’, ‘দুর্নীতি নিপাত যাক, বিএসএমএমইউ মুক্তি পাক’, ‘চোরাই নীতি বন্ধ কর, স্বচ্ছতা কায়েম করো’, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক চিকিৎসকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে’, ‘দাবি মোদের একটাই, ভিসির পদত্যাগ চাই’ ও ‘পিতার নাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নাই’-সহ বিভিন্ন শ্লোগান।
এসময় তারা বলেন, মেডিক্যাল অফিসার পদে লিখিত পরীক্ষায় যে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি হয়েছে তা আমরা প্রশাসনকে মৌখিক এবং লিখিতভাবে কয়েকদফা জানিয়েছি। কিন্তু তারপরও তারা বলছেন, অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমাদের অভিযোগ নাকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অযৌক্তিক মনে হয়। তাই আমরা অবিলম্বে এই ভিসির পদত্যাগ চাই। এই পরীক্ষা বাতিল করে আবারও পরীক্ষা নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চিকিৎসকদের নামে যে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এদিকে, গত ১১ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চিকিৎসকদের ওপর পুলিশি হামলা এবং তারপর তাদের নামে মামলার প্রতিবাদে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অনেক মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত বিএসএমএমইউয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে আন্দোলন করে আসছিলেন নিয়োগপ্রত্যাশী চিকিৎসকরা। প্রশ্নপত্র ফাঁস, নিয়োগ সংশ্লিষ্টদের স্বজনপ্রীতিসহ ছয়টি সুনির্দিষ্ট অনিয়মের অভিযোগ আনেন তারা। আন্দোলনকারীরা বলছেন, ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় সুনির্দিষ্ট ছয়টি অনিয়মের প্রমাণসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পরীক্ষার আগে-পরে অনেকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ করলেও তারা প্রতিকার পাননি।
২০০টি মেডিকেল অফিসারের পদে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিএসএমএইউ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১৮০ জন এমবিবিএস ও ২০ জন বিডিএস চিকিৎসক চাওয়া হয়। প্রথম দফায় নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হলেও সেটি পিছিয়ে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পরীক্ষার দিন ঠিক করা হয়। পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রশ্নপত্রও ছাপানো হয়। কিন্তু অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা স্থগিত করে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাপা হওয়ার দেড় বছর পর গত ২২ মার্চ সেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১১ জনু মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা চলার দ্বিতীয় দিনে আন্দোলকারী চিকিৎসকদের বিক্ষোভের মুখে সে পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করার কথা জানান উপাচার্য। সেদিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৭ জনের নামসহ আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে অজ্ঞাত করে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করে। এরপর ১৩ জুন সিন্ডিকেটের সভা শেষে উপাচার্য জানান পরীক্ষা বাতিল করার সুযোগ নেই, অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা নেই।
সারাবাংলা/জেএ/এমআই