২৮ মার্কিন পণ্যে কর বাড়াল ভারত
১৬ জুন ২০১৯ ১৯:২১
বাদাম, আপেল, আখরোটসহ ২৮ মার্কিন পণ্যে কর বাড়িয়েছে ভারত। এছাড়া ই-কমার্স ও ডাটা লোকালাইজিংয়ের জন্যও নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে দেশটি, যা অনলাইন নির্ভর ব্যবসার খরচ বাড়িয়ে দেবে। এরই মধ্যে এই নীতিমালা নিয়ে অ্যামাজন, ওয়ালমার্টের মতো অনলাইন জায়ান্টগুলো ক্ষোভ জানিয়েছে। গত ৫ জুন ভারতের জন্য যুক্তরাষ্ট্র জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রিফারেন্স (জিএসপি) সুবিধা বাতিল করে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত মার্কিনিদের জন্য এই বাড়তি কর আরোপ করেছে।
আজ রোববার (১৬ জুন) এই ২৮ পণ্যে নতুন করহার কার্যকর করেছে ভারত। পণ্যভেদে ৭০ থেকে ১২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে গত শুক্রবার এই করহার ঘোষণা করেছিল দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক গত এক দশকে ঈর্ষণীয় উচ্চতায় পৌঁছেছে। কেবল ২০১৮ সালেই যুক্তরাষ্ট্রে ১৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য করেছে ভারত।
মার্কিন বাজারে ভারত ‘হাফ ট্যারিফ কান্ট্রি’ হিসেবে পরিচিত। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তার প্রশাসন ভারতের জন্য জিএসপি বা শুল্ক ছাড় নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে আসছিলেন। ভারতকে নিয়ে তার মন্তব্য, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ভারত যেসব বাণিজ্য সুবিধা পেয়ে আসছে, এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তি বলতে গেলে কিছুই নয়। তাই তিনি ভারতকে দেওয়া শুল্ক সুবিধা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী গত ৫ জুন ভারতের জন্য জিএসপি সুবিধা বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২৮টি পণ্যের মধ্যে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত বাদাম, আপেল, আখরোটের বড় বাজার ভারত। কিন্তু ভারতকে দেওয়া জিএসপি সুবিধা যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করায় তারা এসব মার্কিন পণ্যে বর্ধিত শুল্ক আরোপ করেছে। আর এই নতুন শুল্ক হার অপরিবর্তিত থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের ভোগ্যপণ্য বাণিজ্যে সংকট আসন্ন।
বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, এছাড়া ই-কমার্স ও ডাটা লোকালাইজিং সংক্রান্ত নতুন নীতিমালার কারণে অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, মাস্টারকার্ড ও ভিসার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোও ভারতে চাপের মুখে থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারত থেকে রফতানি করা অ্যালুমিনিয়াম (১০ শতাংশ) ও স্টিলের (২৫ শতাংশ) ওপর গত বছর যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ানোর পর থেকেই দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ ২৮ পণ্যে ১২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বাড়ানোয় এই উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাল।
এদিকে, জাপানে অনুষ্ঠেয় জি২০ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুবরামানিয়াম জয়শংকর ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এই বৈঠক থেকেই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে উত্তজেনা প্রশমনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও রয়টার্সকে বলেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৈষম্য নিরসন ও ভারতে মার্কিন বাণিজ্যের প্রসারের ব্যাপারে চলতি সপ্তাহে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত আছে।
সারাবাংলা/টিআর