Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাস্তবায়ন না করতে পারলে এত বড় বাজেট দিলাম কিভাবে?’


১৭ জুন ২০১৯ ২২:১৪

ফাইল ছবি

সংসদ ভবন থেকে: বাজেট নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, যদি বাজেট বাস্তবায়নই করতে না পারি, তাহলে ২০০৮ সালের ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট থেকে এখন কিভাবে ৫ লাখ কোটি টাকার ওপরে বাজেট দিলাম? এই টাকা আসলো কোথায় থেকে? এত বড় বাজেট কিভাবে দিলাম, যদি বাস্তবায়নের দক্ষতাই না থাকবে? এর উন্নয়নের সুফল তো সারাদেশের মানুষ পাচ্ছে। কাজেই অযথা মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৭ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্যে রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন- বালিশ কেনার দায়িত্বে ছিলেন ছাত্রদল নেতা: প্রধানমন্ত্রী

যেকোনো অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণত অর্থমন্ত্রী সমাপনী বক্তৃতা দিয়ে থাকেন। কিন্তু এবার অর্থমন্ত্রীর অসুস্থতার জন্য বাজেট যেমন উত্থাপন করতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে, একই ঘটনা ঘটলো সম্পূরক বাজেট পাস করার সময়ও। এদিনও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য স্পিকারকে ধন্যবাদ দিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেউ বলছেন বাজেট দিয়ে বাস্তবায়ন করতে পারে না। বাজেট বাস্তবায়নের একটা বিষয় আছে। আমরা আজ বাজেট উপস্থাপন করছি, বাজেট পাস হবে ৩০ জুনে। আমরা একবছর পর আবার বাজেট দেবো। এই একবছরে আমরা বিশেষ করে উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়ন করি। বছরের মাঝামাঝি সময়ে গিয়ে সেগুলোর হিসাব নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, কোথায় কোন খাতে কী বরাদ্দ দিয়েছিলাম, কতটা কার্যকর হলো, কতটা হলো না, কিংবা কোন কোন জায়গায় বরাদ্দ করা টাকা যথাযথ বাস্তবায়ন করা সম্ভব বা সম্ভব না— এগুলো ঢেলে সাজানো হয়। সেই অনুযায়ী বাজেট পরিমার্জন করি, সংশোধন করি— এটাই নিয়ম।

আরও পড়ুন- বিরোধিতার মুখে ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আহরণে উচ্চাভিলাষী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। উচ্চাভিলাষ না থাকলে অর্জন হয় না। আমাদেরও উচ্চাভিলাষ না থাকলে এসব অর্জন করা কখনই সম্ভব হতো না।

বিদ্যুৎ নিয়ে সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুত নিয়ে অনেকে কথা বলছেন। কেউ কেউ বলেছেন— যে বিদ্যুতের এত উন্নয়ন হলো, তাহলে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয় না কেন? আমি বলব— একটা কথা মনে রাখতে হবে, বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো সবগুলো সবসময় চালু থাকে না। প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্র মাঝে মাঝে নতুনভাবে সংস্কার করতে হয়। যে কারণে বন্ধ থাকে। যেখানে যতটুক চাহিদা, সেই চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। আজ দেশের ৯৩ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাচ্ছে।

সম্পূরক বাজেট প্রসঙ্গে সংসদ নেতা বলেন, সম্পূরক বাজেট পেশ করেছি। বেশকিছু প্রশ্ন এসেছে। প্রতি বাজেটেই সরকারের উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছাতে চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে প্রাক্কলন করে থাকি। তবে আগের বছরগুলোতে বাজেট বাস্তবায়ন পরিসংখ্যান এ কথাই প্রমাণ করে, আমাদের লক্ষ্যগুলো সবসময় বাস্তবভিত্তিক ছিল।

আরও পড়ুন- ব্যাংকে টাকা আছে, তবে লুটে খাওয়ার জন্য নয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাস্তবতার কারণেই বাজেটে কিছুটা সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিমার্জনের প্রয়োজন হয়। প্রতিবছরই এটা করে থাকি। এটা শুধু আমাদের দেশে না, সব দেশেই হয়ে থাকে। ২০১৮ সালে যখন বাজেট পেশ করি, তখনই লক্ষ্য স্থির করেছিলাম। পরে সংশোধন-পরিমার্জনের প্রয়োজন হয়েছে, সেটি এই সম্পূরক বাজেট।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেট প্রণয়নের সময় সামষ্টিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ অনুমান করেছিলাম। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে তা ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ হবে বলে অনুমান করছি। আবার সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, সেটা সফলভাবে অতিক্রম করতে সক্ষম হব বলে আশা করছি। অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ অনুমান করা হলেও সংশোধিত মূল্যস্ফীতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রাক্কলিত  জিডিপি ২৫ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ কোটি টাকার পরিবর্তে কিছুটা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ, যা অনুমান করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এগুলো খুব স্বাভাবিক নিয়মেই হয়ে থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বলেই আজ উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি। বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের বিস্ময়। আমরা যদি কাজই না করতাম, তবে দারিদ্র্যের হার ৪০ ভাগ থেকে ২১ ভাগে নেমে আসত না। ২১ ভাগ থেকে আমরা আরও নামাব। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, ইনশাল্লাহ আরও এগিয়ে যাব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ইনশাল্লাহ আমরা গড়ে তুলব।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

২০১৮-১৯ অর্থবছর জাতীয় সংসদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেট সম্পূরক বাজেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর