Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওরা ৬ জন, বন্দরে নেওয়ার পথে লোপাট করে রফতানি পণ্য


১৮ জুন ২০১৯ ২০:০০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কারখানা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার পথে গাড়ি থেকে রফতানি পণ্য লোপাট করে, এমন একটি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। ফ্রান্সে রফতানির জন্য তৈরি প্রায় সাড়ে ৪ হাজার জ্যাকেট লোপাটের সময় হাতেনাতে তাদের ধরা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার আমিন জুট মিলের সামনে হক বেভারেজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পরিত্যক্ত গুদাম থেকে জ্যাকেটবোঝাই কাভার্ডভ্যান উদ্ধার ও তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার ছয়জন হলেন সাহাদাত হোসেন (২৮), ওবায়দুল হক (৩৭), সোহাগ হোসেন (৩২), সিরাজ মিয়া (২৮), রুবেল হোসেন (২২ ) এবং মো. সুমন (৩০)।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-উত্তর) মির্জা সায়েম মাহমুদ সারাবাংলাকে জানান, নগরীর চাক্তাইয়ে দ্বীপ অ্যাপারেলস নামে একটি পোশাক কারখানায় তৈরি জ্যাকেট ৮টি কাভার্ডভ্যানে করে পাঠানো হচ্ছিল বন্দর ভবন সংলগ্ন বেসরকারি এছাক ব্রাদার্স কনটেইনার ডিপোতে। ৭টি কাভার্ডভ্যান কনটেইনার ডিপোতে গেলেও একটির হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না।

সোমবার রাত ১১টার দিকে পোশাক কারখানার পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হলে অভিযানে নামে নগর গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম। মঙ্গলবার সকালে বায়েজিদে হক বেভারেজের পরিত্যক্ত গুদামে কাভার্ডভ্যানটি পাওয়া যায়। সেখান থেকে ৩৬০ কার্টনে ৪ হাজার ৩২০ পিস তৈরি জ্যাকেটসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সের সী-ট্র্যাক নামে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি এই গার্মেন্টস আইটেমগুলো তৈরির অর্ডার দিয়েছিল। এই কোম্পানি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এসব পণ্য বিক্রি করে।’

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার ৬ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এডিসি সায়েম জানান, কাভার্ডভ্যানে রাখা প্রতিটি কার্টন কেটে কিছু জ্যাকেট বের করে সেখানে ঝুটকাপড় ঢুকিয়ে প্লাস্টিক টেপ দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হত। সেই অবস্থাতেই কার্টনগুলো জাহাজে তুলে দেওয়া হত। এতে যে পরিমাণ জ্যাকেটের অর্ডার দিয়েছিল ফ্রান্সের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, তার থেকে কম পেত তারা।

এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে জানিয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তা সায়েম বলেন, ‘কারখানা থেকে বন্দরে অর্ডারের সমপরিমাণ পণ্যই পাঠানো হয় কারখানা থেকে। কিন্তু মাঝপথে পণ্য লোপাট হয়ে যায়। রপ্তানির পর দোষ পড়ে কারখানার। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো পরবর্তীতে আর অর্ডার দিতে চায় না। এতে বর্হিবিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, কাভার্ডভ্যান থেকে পণ্য লোপাটে চট্টগ্রামে তিনটি চক্র জড়িত। গ্রেফতার হওয়া ছয়জনের চক্রটির প্রধান শাহাদাত। এই চক্রে আছে আরও দুইজন। গত রমজান মাসে চক্রটি ১১টি পণ্যচুরির ঘটনা ঘটিয়েয়েছ। একইভাবে চট্টগ্রামে আরও দুটি চক্র আছে।

বর্হিবিশ্বের রফতানি বাজারে বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে এ ধরনের চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার কথা জানিয়ে সায়েম বলেন, ‘তিন পর্যায়ের লোকজন এই ধরনের জালিয়াতিতে জড়িত। কারখানার লোকজন জড়িত থাকতে পারে। গাড়ির চালক ও সহকারী বা মালিক পর্যায়ের কেউ। এবং কনটেইনার ডিপোতে যেখানে গাড়ি থেকে খালাস হয় সেখানকার লোকজন। সবার বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।’

সারাবাংলা/আরডি/একে

চট্টগ্রাম রফতানি পণ্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর