চট্টগ্রামে বিএনপি নেতার বাসায় ‘ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে’ হামলা
১৯ জুন ২০১৯ ২১:২৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে চট্টগ্রাম নগরীতে এক বিএনপি নেতার বাসায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। ওই বিএনপি নেতা অভিযোগ করেছেন, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশে নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ’র নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে। তবে শাহাদাত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বুধবার (১৯ জুন) বিকেলে নগরীর চান্দগাঁও থানার কে বি আমান আলী রোডের মনোরমা আবাসিক এলাকায় বিএনপি নেতা নুরুল আনোয়ারের বাসায় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
নুরুল আনোয়ার চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি এবং চন্দনাইশ পৌরসভা বিএনপির সভাপতি। তিনি চন্দনাইশ সদর আসনের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার প্রশাসক ছিলেন। শাহাদাতের বাড়িও চন্দনাইশ উপজেলায়।
নুরুল আনোয়ার সারাবাংলাকে জানান, সম্প্রতি দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক সভায় তিনি সাংগঠনিক কমিটি গঠনে শাহাদাতের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলেন। এসময় শাহাদাত হোসেন সম্পর্কে বক্তব্যে কিছু কথা বলেন। অভ্যন্তরীণ সভার এসব বক্তব্য সেখানকার কেউ শাহাদাতকে পৌঁছে দেন। এতে নুরুল আনোয়ারের উপর ক্ষুব্ধ হন শাহাদাত।
‘আজ (বুধবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাহাদাত সাহেব আমাকে ফোন করে আমি কেন উনার বিরুদ্ধে কথা বলেছি জানতে চান। এসময় তার সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। এরপর তিনি আবারও ফোন করে লালদিঘীর পাড়ে সুগন্ধা হোটেলে আমার অফিসে আসার কথা বলেন। আমি অপেক্ষা করলেও উনি আসেননি। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তিনি আবারও ফোন করে আমাকে হুমকি দেন। এর ঘণ্টাখানেক পর আমার বাসায় আকস্মিকভাবে হামলা হয়।’ বলেন এই বিএনপি নেতা
নুরুল আনোয়ারের দাবি, গাজী সিরাজ উল্লাহ মোটর সাইকেলে করে তার বাসার সামনে যান। এসময় সেখানে আরও কমপক্ষে ৩০ জন জড়ো হন। ৮-১০ জন বাসার ভেতরে ঢুকে প্রথমে কলাপসিবল গেইট বন্ধ করে দেন। তারপর সেখানে ভাড়াটিয়ার একটি প্রাইভেট কার ভাংচুর করেন। নুরুল আনোয়ারের বাসাসহ কয়েকটি বাসার কাচের জানালা ভাংচুর করেন। বাসার সামনে রাখা ফুলের টবসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র তছনছ করেন। প্রায় ১০ মিনিট ধরে তাণ্ডব চালিয়ে তারা দ্রুত সেখান থেকে চলে যান।
ছাত্রদল নেতা গাজী সিরাজ নগর বিএনপির রাজনীতিতে শাহাদাতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। শাহাদাত হামলার পরিকল্পনা নিয়ে গাজী সিরাজকে বাসায় পাঠিয়েছে, বলে দাবি নুরুল আনোয়ারের।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. শাহাদাত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘উনি (নুরুল আনোয়ার) রাজনীতি করেন গ্রামে, আমি করি শহরে। আমার সঙ্গে তো উনার কোনো বিরোধ নেই। আমি কেন হামলার নির্দেশ দেব? আমি শুনেছি- এলাকার লোকজনের সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে উনার বিরোধ আছে। সেই বিরোধ নিয়ে উনার ছেলের সঙ্গে এলাকার কিছু লোকের সমস্যা হয়েছে। এরপর হামলা হয়েছে। উনার বাসার সামনে যদি সিসি ক্যামেরা থাকে, সেখানে দেখা হোক যে, আমি হামলার সময় ছিলাম কি না।’
গাজী সিরাজের মোবাইল বন্ধ থাকায় এই বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার সারাবাংলাকে বলেন, ‘হামলার খবর পেয়ে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। সেখানে ভাংচুরের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিএনপি নেতা নুরুল আনোয়ার অভিযোগ করেছেন- শাহাদাত সাহেবের লোকজন নাকি এই ভাংচুর করেছে। আমরা মামলা দায়েরের জন্য বলেছি।’
শাহাদাত হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন নুরুল আনোয়ার।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই