Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের রোগ উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত, সংসদে মেনন


১৯ জুন ২০১৯ ২১:৫৭

রাশেদ খান মেনন (ফাইল ছবি)

ঢাকা: রাষ্ট্রযন্ত্র নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা অব্যাহত রাখলে রাজনৈতিক দলগুলো কেবল নির্বাচন নয়, রাষ্ট্র পরিচালনাতেও প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

তিনি বলেন, এটা সবার জন্য যেমন, আওয়ামী লীগের জন্যও প্রযোজ্য। নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে আমাদের কাজ করতে হবে। কারণ নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের এই রোগ এখন উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৯ জুন) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।

অধিবেশনে আলোচনায় মেনন বলেন, পাঁচ দফা উপজেলা নির্বাচনে আমাদের দলের অভিজ্ঞতা, এমনকি আওয়ামী লীগের নিজেদের প্রার্থীদের অভিজ্ঞতাও করুণ। নির্বাচন কমিশন কিংবা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং তাদেরই যোগসাজশ রয়েছে। এর ফলে নির্বাচন ও সামগ্রিক নির্বাচনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে অনাস্থা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে ভোট দেওয়া নিয়ে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এটা নির্বাচন কেবল নয়, গণতন্ত্রের জন্যও বিপদজনক।

অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার সূত্র ধরে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ সেই উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে বলে অভিযোগ করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি। এই ১০ শতাংশ ধনী ৯০ শতাংশ সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মেনন বলেন, সমৃদ্ধির পথে আমাদের এই অগ্রযাত্রা স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু আমাদের আর্থিক খাতের দুর্গতি এই পথে কাঁটা হয়ে রয়েছে। খেলাপি ঋণের দায়ে ব্যাংকগুলো নুব্জ হয়ে পড়েছে। এগুলোতে তারল্য সংকট চলছে। করের টাকা দিয়ে ব্যাংকের ঘাটতি মূলধন পূরণ করার জন্য এবারেও বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক খোলার অনুমোদন দেওয়া, ব্যাংক মালিকদের আবদারে ব্যাংক আইন সংশোধন করে ব্যাংকগুলোকে পারিবারিক মালিকানার হাতে তুলে দেওয়া, একই ব্যক্তিকে একাধিক ব্যাংকের মালিক হওয়ার সুযোগ দেওয়া, ব্যাংক মালিক অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমেই সিআরআর নির্ধারণ— এগুলোকেই ব্যাংকিং খাতের দুর্গতির জন্য দায়ী বলে চিহ্নিত করেন সাবেক এই মন্ত্রী। একইসঙ্গে এই খাতটিকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে বলেও সতর্ক করে দেন তিনি।

রাশেদ খান মেনন বলেন, অর্থমন্ত্রী ব্যাংক খাতে সংস্কারের জন্য কিছু কথা বলেছেন, সেগুলোও ভবিষ্যতবাচক। ব্যাংক কমিশন গঠনের প্রস্তাবকেও তিনি আলোচনাসাপেক্ষ রেখে দিয়েছেন। অন্যদিকে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেও মাত্র কয়েকদিন আগেই খেলাপি ঋণ আদায়ে তার মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, তাতে ওই ঋণখেলাপিদের বরং পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ না দিলে এই প্রজ্ঞাপন মে মাস থেকে কার্যকর হতো। এ বিষয়ে গত অধিবেশনে ৬৮ বিধিতে আলোচনার জন্য নোটিশ দিয়েছিলাম। আপনার অনুমতি পাইনি। সংসদে আলোচনা হলে হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হত না।

মেনন আরও বলেন, আমি বিনীতভাবে বলতে চাই, সাবেক অর্থমন্ত্রী যেমন ব্যাংক সংস্কার করতে পারেননি, এবারেও এ নিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে। কারণ ওরাই অর্থনীতির বর্তমান নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে। বাজেটের ঘাটতি অর্থ পূরণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ টাকা সংগ্রহের যে কথা বলা হয়েছে, তাতে ব্যাংকের তারল্য সংকট আরও বাড়বে। বেসরকারি বিনিয়োগ আরও কমে যাবে। কর্মসংস্থান হবে না।

মেনন আরও বলেন, অর্থমন্ত্রী সার্বজনীন পেনশন স্কিমের কথা বলেছেন। এই স্কিম প্রথমে চালু করতে হবে ক্ষেতমজুর, শহরের শ্রমজীবী ও নারীদের জন্য। আর এসব করতে ক্ষেতমজুরদের নিবন্ধনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও ভোক্তা স্বার্থ রক্ষার জন্য রেশনিং, বিশেষ করে গ্রামীণ শ্রমজীবী ও শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান তিনি।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

উপজেলা নির্বাচন নির্বাচন নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ রাশেদ খান মেনন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

সম্পর্কিত খবর