Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুফিয়া কামালের জন্মদিনে গুগলের ডুডল


২০ জুন ২০১৯ ০২:৫৮

ঢাকা: জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের হোমপেজে গেলেই আজ বৃহস্পতিবার (২০ ‍জুন) চোখে পড়ছে বিশেষ এক ডুডল। গুগল বিশেষে এই ডুডলটি তৈরি করেছে বাংলাদেশের মহীয়সী নারী কবি ‍সুফিয়া কামালের ১০৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে।

লাল-সবুজের মিশেলের ডুডল লেখার ওপর বসানো হয়েছে কবি সুফিয়া কামালের পোট্রেট। আর ওই পোট্রেটে ক্লিক করতেই চোখের সামনে ভেসে উঠছে সুফিয়া কামাল সম্পর্কে বিস্তারিত।

গুগলের হোমপেজে সার্চবক্সের ওপরে দেখানো বিশেষ লোগো এ ডুডল। বিশেষ কোনো দিন বা বিশেষ কোনো ব্যক্তির জন্য নিজেদের লোগো বদলে মানানসই যে লোগো তৈরি করে, সেটিই ডুডল। ডুডল পেজে ইংরেজিতে কবি সুফিয়া কামাল সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। আর গুগল এই ডুললটি শুধুমাত্র বাংলাদেশে প্রদর্শন করছে।

দেশের নারী জাগরণের অগ্রদূত ‘সাঁঝের মায়া’র কবি বেগম সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদের নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

সুফিয়া কামাল শৈশবে নানার বাড়িতে থাকায় বহুভাষার পণ্ডিত বড় মামার সান্নিধ্য এবং তার সমৃদ্ধ লাইব্রেরির সংস্পর্শে জ্ঞানচর্চার প্রতি অনুরাগী হয়ে ওঠেন। সাহিত্য পাঠের পাশাপাশি সুফিয়া কামাল সাহিত্য রচনা করেন। ১৯২৬ সালে তার প্রথম কবিতা ‘বাসন্ত’ সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত হয় তার গল্পের সংকলন ‘কেয়ার কাঁটা’। ১৯৩৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সাঁঝের মায়া’র মুখবন্ধ লিখেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর সুফিয়া কামাল পরিবারসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং এই আন্দোলনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন। পাকিস্তন সরকার ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন। এ বছর তিনি ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। ১৯৭০ সালে তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেন।

স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ কারফিউ উপেক্ষা করে নীরব শোভাযাত্রা বের করেন। সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

সাঁঝের মায়া, মন ও জীবন, শান্তি ও প্রার্থনা, উদাত্ত পৃথিবী ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এ ছাড়া সোভিয়েতের দিনগুলি এবং একাত্তরের ডায়েরী তার অন্যতম ভ্রমণ ও স্মৃতিগ্রন্থ। সুফিয়া কামাল দেশ-বিদেশের ৫০টিরও বেশী পুরস্কার লাভ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সোভিয়েত লেনিন পদক, একুশে পদক, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পদক।

মহীয়ষী এই নারী ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই সম্মান লাভ করেন।

সারাবংলা/পিটিএম

গুগল জন্মদিন ডুডল সুফিয়া কামাল


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর