রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ অনেক কিছুই গোপন করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২০ জুন ২০১৯ ১৩:৪৯
ঢাকা: ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ অনেককিছুই গোপন করেছে। তার জন্য তারা নিশ্চয়ই দায়ী।’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জেনেভা কনভেনশনের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর স্ট্রাটেজিক স্টাডির (বিস) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বহু বছর ধরে মিয়ানমারে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসা, বিদ্বেষ এবং বর্বর আক্রমণ চলছে। কিন্তু জাতিসংঘ এই বিষয়ে কখনোই সজাগ হয়নি। আমরা প্রায়ই বলে থাকি দুনিয়া থেকে সংঘাত এড়ানোর জন্য আমাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। কিন্তু জাতিসংঘ এই নীতিতে বিশ্বাসী হলেও কাজ করে না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ অনেককিছুই গোপন করেছে। তার জন্য তারা নিশ্চয়ই দায়ী। তারপর দুর্ঘটনা ঘটার পর জাতিসংঘ কিছু বক্তব্য (রোহিঙ্গা ইস্যুতে) দিয়েছে। কিন্তু বেশি বক্তব্য বাংলাদেশের দিকে ঘুরাঘুরি করছে। যেখানে কাজটা করা দরকার সেই রাখাইন প্রভিন্সে, সেখানে জাতিসংঘের অবস্থান খুবই দুর্বল।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭০ বছর আগে মানবতা রক্ষায় জেনেভা কনভেনশন নিয়ে বিশ্ব একমত হল সেটিকে বাস্তবায়ন করতে হবে।’
আজ আমরা জেনেভা কনভেনশনের জন্মতিথি পালন করছি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন সারাবিশ্ব হত্যাযজ্ঞে মেতেছিল তা থেকে প্রতিহত করতেই বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এ কনভেনশনের আয়োজন করে। এটি খুব ভালো কনভেনশন, ভালো ভালো আইন আছে। তবে এটি বৈষম্যমূলকভাবে এখন ব্যবহার হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বে যখন মানবতা বিঘ্নিত হয়, তখন যারা এ আইনটি তৈরি করেছিল তারাই মুখ ফিরিয়ে রাখে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘সেজন্য এখন এ কনভেনশন নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তুলছে। কনভেনশনের আইনগুলো দুর্বল হয়ে গেছে। যুদ্ধে যারা সাধারণ মানুষ তাদের আমাদের রক্ষা করতে হবে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধে আমরা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। তেমনি মিয়ানমারের অত্যাচারে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
জেনেভা কনভেনশনের আইনগুলো যদি মানা হতো তাহলে এ ধরণের ঘটনা রোধ করা যেতে। আজ মিয়ানমার, ফিলিস্তিন যেখানেই মানবতা লঙ্ঘিত হচ্ছে তারই প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তুলে দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।’
সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই