রোহিঙ্গা সম্মতিপত্রে কী আছে জানতে চায় বিএনপি
২৪ নভেম্বর ২০১৭ ১১:৩৫
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের সঙ্গে সই হওয়া সম্মতিপত্রে কী আছে, তা জানতে চায় বিএনপি। ওই সম্মতিপত্রের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ না করায় হতাশা ও সংশয় প্রকাশ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বর্বরতা বন্ধ না করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলে তাদের নরকে ঠেলে দেওয়া হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কাযালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা খুব হতাশ হয়েছি। ওই চুক্তির মূল বিষয়গুলো আমরা জানি না, জনসম্মুখে আনা হয়নি। এই চুক্তির ফলে কতটুকু আস্থা সৃষ্টি হবে যে তারা (রোহিঙ্গা) সেই জায়গায় ফিরে যাবেন? সে জায়গায় তাদের নিরাপত্তা থাকবে কিনা, আবার তারা সেই গণহত্যার শিকার হবে কিনা- এ বিষয়গুলো এখন পর্যন্ত আমরা কিছুই জানি না।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো মিয়ানমার সেনাবাহিনী নির্যাতন করছে, অত্যাচার করছে। প্রতিদিনই মিয়ানমার থেকে বহু লোক বাংলাদেশ আসছে। এই অত্যাচার-নির্যাতন-গণহত্যা বন্ধ না করে আবার সেখানে তাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি আরেকটি নরকের মধ্যে তাদের ঠেলে দেওয়ার মত হবে । মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে করা ওই সমঝোতায় কী কী আছে- তা প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন-আমরা আশা করব, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তিতে রোহিঙ্গাদের সত্যিকার অর্থে নাগরিকের মর্যাদা দিয়ে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। অন্যথায় এটা একেবারেই ব্যর্থ একটি চুক্তি হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। মিয়ানমারের গণহত্যার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার সেভাবে তুলে ধরতে পারে নি বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছোট ভাই আহমেদ কামালের জানাজায় শরিক হন মির্জা ফখরুল। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন-বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপারসনের প্রেসউইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান।
এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন- সরকার নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে জনগণও পাল্টা নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে। শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো আপনার আত্মীয়’র বলে শোনা যায়। সে কারণেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমা সত্তেও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে স্বজনদের পকেট ভরার ব্যবস্থা করলেন। এভাবে অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সরকার যদি নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, তাহলে জনগণও পাল্টা নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করবে। তবে আমরা সেটা চাই না।
তিনি বলেন, বাইরে নানা ঘটনা, নানা গুঞ্জন শোনা যায়। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বাসভবন থেকে বের হতেন না। এখন আবার বের হচ্ছেন। কিসের এতো ভয় আপনার? এতো আতঙ্ক থাকলে তো দেশ চালাতে পারবেন না। সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে আছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, প্রেসক্লাবে তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ছিল। কিন্তু সেটা করতে দেয়নি সরকার। কেননা, সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তারেক রহমানের নাম শুনলেই তারা ভয় পায়।
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, সরকার অগণতান্ত্রিক বলেই কোনো গণতান্ত্রিক শক্তিকে সহ্য করতে পারে না। বিরোধী অবস্থান নিলেই জেল-জুলুমের শিকার হতে হয়। কিন্তু এভাবে বেশিদিন চলবে না। ধৈযের বাঁধ ভেঙে গেলে জনগণ ঘুরে দাঁড়াতে বাধ্য হবে। তখন সব জুলুম-নিযার্তনের অবসান ঘটবে।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, আয়োজক সংগঠনের অতিরিক্ত মহাসচিব মো. জাকির হোসেন, যুবদল নেতা গিয়াস উদ্দীন মামুন প্রমুখস সংগঠনটির বিভিন্ন পযায়ের নেতারা।
মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি রোহিঙ্গা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্মতিপত্র