রাখাইনে গণকবরের খোঁজ
২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৩:৪৯
সারাবাংলা ডেস্ক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ৫ গণকবরের খোঁজ পেয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এসোসিয়েট প্রেস (এপি)।
বৃহস্পতিবার এপির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গার ৫টি গণ কবর কথা উঠে আসে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গণহত্যার সাক্ষী ২৪ জন জীবিত রোহিঙ্গা এবং মৃতদের আত্মীয়স্বজনদের মোবাইল ক্যামেরার নেওয়া ফুটেজ দিয়ে তৈরি সেই রিপোর্টে সেদিনের গণহত্যার পরের অবস্থা জানা যায়।
নূর কাদির নামে একজন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি জানান সেদিনের ঘটনা, আমরা মিয়ানমারের স্থানীয় খেলা ‘চিনলন’ খেলার জন্য দল বাচাই করছিলাম। হঠাৎ কোথা থেকে সৈন্যরা আমাদের উপরে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এরপর তারা লাশগুলোকে কয়েকটি গণকবরে মাটিচাপা দেয়। এমনকি এসিড দিয়েও লাশগুলো সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
করব দেওয়ার বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির পানিতে মাটি ধুয়ে গেলে কবরে থাকা মৃত দেহগুলোকে দেখা যায়। নূর কাদির তার ছয়জন বন্ধুর মৃতদেহ দুটি আলাদা কবরে খুঁজে পায়। লাশের অবস্থা এত খারাপ ছিল যে শুধু তাদের পোশাক দেখে আন্দাজ করা সম্ভব হয় কোনটা কে ছিল।
নূর কাদির তার মোবাইল ফোনে সেসব দৃশ্যর তুলে রাখে। সেসব দৃশ্য দেখে নূরের কথার প্রমাণ পাওয়া যায়।
গত বছর অগাস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে সামরিক তল্লাসি চৌকিতে হামলার ঘটনায় সমগ্র রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান চলে। সে অভিযান থেকে বাঁচতে রাখাইন থেকে ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের সীমান্তে পালিয়ে আসে। তাদের মুখ থেকে রাখাইনে গণহত্যা, লুটপাট, ধর্ষণ ও অগ্নি সংযোগের কথা জানা যায়। যদিও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে, তারা সেখানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে।
ফিল রবার্টসন একজন মানবাধিকার কর্মী। এপির এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, দলবেঁধে এসে হামলা করা, লাশের উপরে এসিড ফেলা এইসব দেখে বোঝা যায়, সেনাবাহিনী কী পরিমাণে গুছিয়ে আক্রমণ করতে এসেছিল।
তিনি আরও বলেন, এই প্রতিবেদন দেখে অন্তত আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর মিয়ানমারের কাছে জবাবদিহি করার বিষয়ে কঠোর হওয়া উচিত।
এর আগে ডিসেম্বরে রাখাইনে আরেকটি গণ কবর পাওয়া যায়। তখন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দাবী করেছিল এই কবর রাখাইনের সন্ত্রাসীদের।