Friday 16 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেড়লাখ শিশু ভর্তি হতে পারবে না পছন্দের স্কুলে


৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৬:১০ | আপডেট: ৮ মার্চ ২০১৮ ১৯:৫৮

আবারো শুরু হয়েছে রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি যুদ্ধ। এ বছর দুই লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেবে। কিন্তু আসন আছে ৫০ হাজার। দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা। সরকারি-বেসরকারি শিক্ষার হালচাল নিয়ে আজ থাকছে প্রথম পর্ব। প্রতিবেদনটি করেছেন সারাবাংলার সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মেসবাহ শিমুল

বছর শেষ না হতেই রাজধানীবাসীর জন্য নতুন দুশ্চিন্তা সন্তানদের ভালো কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি করা। সন্তানের মেধা, নিজেদের আর্থিক সঙ্গতি আর যাতায়াত ও বাসস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অক্টোবর নভেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। তবে সরকারি শিক্ষাসেবা অপ্রতুল হওয়ায় অধিকাংশ অভিভবাককে ফিরতে হয় বেসরকারি বিদ্যালয়ের দিকেই।

বিজ্ঞাপন

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) তথ্য বলছে , ঢাকা মহানগরী ৩টি ফিডার শাখাসহ ৩৮টি সরকারি বিদ্যালয় আছে। এসব স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে আসন প্রায় দশ হাজার। এছাড়া ৪৫৬টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সরকারি বিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা কম হওয়ায় তাই বরাবরের  মত বেসরকারি এসব বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে শিক্ষার্থীদের।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে রাজধানীতে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য শিশু রয়েছে প্রায় দুই লাখ। এ হিসেবে প্রথম শ্রেণিতে দেড় লক্ষাধিক শিশু অভিভাবকদের পছন্দের স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না।

বেসরকারি বিদ্যালয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতা

সরকারি বিদ্যালয়ে আসন সংকট তীব্র হওয়ায় এটাকে মওকা হিসেবে নিচ্ছে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো। এক্ষেত্রে নামি-দামি বিদ্যালয়গুলো বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে তরতর করে। নানা অজুহাতে ভর্তি ফিসহ বিভিন্ন খরচের চাপ অসহনীয় রকমের বাড়লেও  সন্তানদের ভবিষ্যতে কথা চিন্তা করে অভিভাবকদের তা মেনে নিতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আ. রউফ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বিএফ শাহীন স্কুল, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, হলিক্রস উচ্চ বালিকা স্কুল ও কলেজ, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, অগ্রণী স্কুল ও কলেজ, সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জুনিয়র ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজ, গ্রীনফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাইল স্টোন কলেজ, ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলসহ ৪০টি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি নিয়ে অভিভাবকরা রীতিমতো যুদ্ধে নেমে পড়েছেন। কোনো কোনো স্কুলে সময় শেষ হবার  অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে ভর্তি ফরম বিক্রি। এদিকে ,সরকারি স্কুলে প্রথম শ্রেণীর অনলাইন ভরতি প্রক্রিয়া শুরু আবেদন শুরু হয়েছে গত ১ লা জানুয়ারি যা চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিল দিবা শাখার

১ম, ২য়, ৩য় এবং প্রভাতী ও দিবা শিফটের ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ ৭ম শ্রেণিতে এবছর ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া বনশ্রী শাখার দিবা শিফটে ১ম, ২য়, ৩য় ও ৫ম এবং প্রভাতী শিফটে ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষারথী নেওয়া হবে না। মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণি থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত সীমিত আসনে ভর্তি করা হবে। মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোনো শ্রেণিতেই শিক্ষার্থী ভর্তি করবে না। সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়ে শুধু তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করবে। রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ৯ম শ্রেণিতে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীর ভর্তি নেওয়া হবে।

ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে তৃতীয় শ্রেণিতে দিবা শাখায় ১০০ জন  ও প্রভাতী শাখায় বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে  ৫০ জন করে ভর্তি করা হবে। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে উভয় শিফটে বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে ৫০ জন শিক্ষারথী ভর্তি করবে। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ রয়েছে বিশেষ কোঠা। ফলে এ বছর ভালো স্কুলে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভর্তিতে প্রতিযোগির হার বেশি। বিশেষ করে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য এবারও  যুদ্ধে নামতে হবে অভিভাবকদের।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ (বালক) মুর্শেদা শাহীন সারাবাংলাকে বলেন, আমরা শিক্ষার্থী কমিয়ে কোয়ালিটি বাড়াতে চাই। তাই এ বছর কোনো শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি নেব না। যেসব সব শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে তারা অন্যত্র চলে গেলেও শূন্য কোঠায় ভর্তি করা হবে না।

ভর্তি ইচ্ছুক অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পছন্দের স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করতে প্রতিদিন ছুটছেন বিভিন্ন স্কুলে। একাধিক প্রাইভেট টিউটরসহ সাহায্য নিচ্ছেন বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের। কোমলমতি শিশুদের হাতে তুলে দিয়েছেন নিষিদ্ধ ভর্তি গাইড। এর বাইরেও অপকৌশলে ভর্তির উপায়ও খুঁজছেন কেউ কেউ।

সারাবাংলা/এমএস/জেডএফ

 

 

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর