বাজেটের ইতিবাচক প্রভাব নেই পুঁজিবাজারে
২৩ জুন ২০১৯ ১৬:০০
ঢাকা: ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য বেশকিছু প্রণোদনা দেওয়া হলেও বাজারে এর ইতিবাচক কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বরং উল্টোপথে হাঁটছে দেশের দুই পুঁজিবাজার।
বাজেটের পর রোববারসহ (২৩ জুন) লেনদেন হওয়া গত ৬ কার্যদিবসের মধ্যে চারদিনই পুঁজিবাজারে সূচকের পতন হয়েছে। এই সময়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ(ডিএসই) সূচক হারিয়েছে ৯১ পয়েন্ট। একই অবস্থা অপর পুঁজিবাজার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেরও (সিএসই)।
বাজার বিশ্লেষকতের মতে, বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য বেশকিছু প্রণোদনা দিলেও তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এতে করে বাজেটে লভ্যাংশের ওপর করমুক্ত আয়সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হলেও এর সুফল বিনিয়োগকারীরা পাচ্ছেন না। এতে করে বাজেটের পর লেনদেন হওয়া গত ৬ কার্যদিবসের মধ্যে চারদিনই পুঁজিবাজারেরর সূচক কমেছে। বিশেষ করে প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্যাশ ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ এবং কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি রিজার্ভ হলে বর্ধিত রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করা নিয়ে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আর এই কারণে পুঁজিবাজার দরপতন হচ্ছে।
এদিকে রোববার ডিএসইতে মোট ৩৪৯টি কোম্পানির ১০ কোটি ৪৮ হাজার ৮৫টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৮টির, কমেছে ২২১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টির দাম। দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ১১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে নেমে আসে। ডিএস-৩০ মূল্যসূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৯৬ পয়েন্ট হয়েছে। আর ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৩১ পয়েন্টে নেমে আসে। এদিন ডিএসইতে আর্থিক লেনদেন হয় ৩৩৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
অন্যদিকে রোববার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৫১টি কোম্পানির ৩৭ লাখ ৮৫ হাজার ৬৭২টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬২টির, কমেছে ১৫৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির। দিনশেষে সিএসইতে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সিএসইতে কেনাবেচা হয়েছিল ৪১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক আগের কার্যদিবসের চেয়ে ২৭ পয়েন্ট কমে ১৬ হাজার ৪৯৫ পয়েন্টে দাঁড়ায়। আগের কার্যদিবসে সিএসইর সূচক ছিল ১৬ হাজার ৫২২ পয়েন্ট।
উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির অর্জিত মুনাফা থেকে ক্যাশ ডিভিডেন্ডের পরিবর্তে স্টক ডিভিডেন্ড দিলে ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। একইসঙ্গে কোম্পানির রিটেইনড আর্নিংস বা বিভিন্ন ধরনের রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি থাকলে বর্ধিত অংশের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হয়েছে। এই কর আরোপ নিয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মধ্যে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এই দুই খাতে ১৫ শতাংশ কর আরোপ করায় বিনিয়োগকারীরা লাভবান হলেও কোম্পানিগুলো এই ক্ষেত্রে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম