‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে’
২৩ জুন ২০১৯ ২০:১৫
সংসদ ভবন থেকে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ দুই সন্তান গ্রহণ বাধ্যতামূলক করে আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের নেই। তবে পরিকল্পিত পরিবার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে মো. মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান। প্রশ্নটি টেবিলে উত্থাপন করা হয়। এদিন দুপুর ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কিত সাধারণ আলোচনার জন্য নির্ধারিত অধিবেশন শুরু হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পরিকল্পিত পরিবার গঠনে বাল্যবিবাহ রোধ; জন্মবিরতিকরণ; নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতকরণ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পুষ্টি ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক মোট ১৫০টি ক্যাম্পেইন করা হয়। পাশাপাশি টিভি চ্যানেলগুলোতে পাঁচ হাজার ও রেডিওতে ছয় হাজার বার্তা প্রচার করা হয়।
সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্য বিষয়ক ১৪০টি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। জনগণের দোরগড়ায় পরিবার পরিকল্পনা সেবা ও বার্তা পৌঁছে দিতে দেশের ৩০ হাজার স্যাটেলাইট ক্লিনিকে প্রতিমাসে সভা আয়োজন করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে ৪৫ হাজার পরিবার কল্যাণ সহকারী প্রতিমাসে একটি করে উঠান বৈঠক করছে। সেখানেই ছোট পরিবার গঠনে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৭০-৭৫ সাল পর্যন্ত প্রজনন হার ছিল শতকরা ৬ দশমিক ৯১ ভাগ। বর্তমানে তা ২ দশমিক ০৫ ভাগ। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭৫ সালে পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের হার ছিল শতাংশ ৭ দশমিক ৭ ভাগ। বর্তমানে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৪ ভাগ। ২০২২ সালের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারের হার শতকরা ৭৫ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। এতে মোট প্রজননের হার শতকরা ২ ভাগে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, ‘ডায়াগনসিসের শতকরা ৪০ ভাগ কমিশন নেন চিৎিসকরা’- এটা কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেডিকেল কলেজে শিক্ষক সংকট
মো. মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষক সংকট রয়েছে। এই সংকট নিরসনে সরকারের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে অনুমোদিত ৩ হাজার ৮২৯টি পদ রয়েছে। অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক পদ শূন্য রয়েছে ১ হাজার ৭৭২টি। তবে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান, দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে।
আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ জেলায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশে বর্তমানে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ১১২টি। এর মধ্যে সরকারি ৩৬টি, বেসরকারি ৭০টি ও সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ছয়টি। সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ৪ হাজার ৬৮টি, বেসরকারিতে ৬ হাজার ২৩১টি এবং সেনাবাহিনীতে ৩৭৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। আগামীতে ভৌগলিক অবস্থান, জনসংখ্যার ঘনত্ব ও প্রয়োজনীয়তা জরিপ করে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে প্রয়োজনের তুলনায় ফার্মাসিস্টের সংখ্যা কম। এ গ্রেডের ১৫ হাজার ২১ জন, বি গ্রেডের ১৬ হাজার ৪৮৯ জন এবং সি গ্রেডের ১ লাখ ৭ হাজার ৪শ’ জন রেজিস্ট্রার্ড ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। বর্তমানে ১৩টি পাবলিক ও ২৮টি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ফার্মেসি বিভাগ চালু রয়েছে।
সারাবাংলা/এএইচএএইচ/এটি