ওসি মোয়াজ্জেমকে জেল কোড অনুযায়ী ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ
২৪ জুন ২০১৯ ১৫:৩১
ঢাকা: ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর মামলায় সোনাগাজী থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে জেল কোড অনুযায়ী ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৪ জুন) দুপুরে ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ বিষয়ে জেল সুপারকে জেলকোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেন।
এর আগে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকা মোয়াজ্জেম হোসেনের ডিভিশন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী ফারুক আহমেদ।
এদিন শুনানিতে ফারুক আহমেদ বলেন, আসামি মোয়াজ্জেম হোসেন ওসি হিসেবে ৯ম গ্রেডের কর্মকর্তা ।তিনি এখনো চাকুরিরত অবস্থায় রয়েছেন। ২০১২ সালের ৩০ জুলাইয়ের গেজেট অনুযায়ী তিনি প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা ও নাগরিক। তাই কারাগারে প্রথম শ্রেনীর কয়েদীর মর্যাদার সব সুযোগ সুবিধা পাবেন তিনি।
মোয়াজ্জেম হোসেনের আইনজীবী শুনানিতে আরও বলেন, কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাকে আসামি গ্রেফতার করতে হয়েছে । যাদের অনেকেই জেলখানায় আছেন। তাই সাধারণ আসামিদের সঙ্গে মোয়াজ্জেম হোসেন থাকলে তার জীবনের ঝুঁকিও রয়েছে। এজন্য আমরা তাকে প্রথম শ্রেণির ডিভিশন দেওয়ার প্রার্থণা করছি।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম ডিভিশনের বিষয়ে বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এজন্য আমরা ডিভিশনের বিষয়ে আপত্তি জানাচ্ছি।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ডিভিশনের বিষয়ে জেল কোড অনুযায়ী জেল সুপারকে ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন।
গত ১৭ জুন জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারিক আদালত। এ মামলায় আগামী ৩০ জুন অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।
গত ১৬ জুন বিকেলে হাইকোর্ট এলাকা থেকে আটক হওয়ার পর ওসি মোয়াজ্জেম শাহবাগ থানা পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। পরের দিন সকালে সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগের মাসের ২৭ তারিখ ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের দায়ের করা মামলায় একই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এদিন মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
সোনাগাজীর মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি থানায় অভিযোগ দিতে আসার পর তাকে আপত্তিকর প্রশ্ন করা ও ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে।
গত ১৫ এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এই আবেদন গ্রহণ করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
এর আগে, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ রুমে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে থেকেই নুসরাতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকেন সিরাজ। তবে মামলা তুলে না নিলে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। গত ১০ এপ্রিলের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের।
সারাবাংলা/এআই/জেডএফ