‘মাদক ব্যবসায়ীদের অস্থির করে তুলতে চাই’
২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২০:০১ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:১১
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: মাদক ব্যবসার অনেক গডফাদারদের চিহ্নিত করতে পারলেও তাদের সঙ্গে মাদক না পাওয়ায় গ্রেফতার করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. জামাল উদ্দীন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘দেশে মাদকের আগ্রাসন বাড়ছে। তরুণ সমাজ কেন জানি মাদকের প্রতি অতি উৎসাহী হয়ে উঠছে, এটি উদ্বেগজনক। তবে নানা সীমাবদ্ধতা থাকায় মাদকের আগ্রাসন আমাদের একার পক্ষে নির্মূল করা সম্ভব নয়। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল ইউনিটের পক্ষ থেকে আরও সহায়তা পেলে মাদক নির্মূল সম্ভব।’
মো. জামাল উদ্দীন আহমেদ মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করে বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। মাদক ব্যবসায়ীদের অস্থির করে তুলতে চাই। তারা স্বস্তিতে থাকতে পারবে না।’
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে শুক্রবার দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ১০ জন শিশু ও ৯ জন বয়স্ক মোট ১৯ জনকে কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন— মো. কামাল হোসেন (৩২), শরীফ (৩৪), মাজুম খাঁ (২৬), নাঈম মিয়া (২০), মিজানুর রহমান (২৬), রুবেল গাজী লিটন (২৬), কাউসার (১৯), সাঈদ খান (৫২), আনোয়ার হোসেন খোকা (৫৬), সিফাত (২৫), বিপ্লব (২৬), মানিক (৩০), রায়হান (২১), তামিম হোসেন (২১), মনি রানী বিশ্বাস (৪৪), মফিজ (৩০), জহিরুল ইসলাম (৩২)।
রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, চানখারপুল, গেণ্ডারিয়া, টিটিপাড়া, খিলগাঁও পুরানা পল্টন, ভাটারা, মতিঝিল, আরামবাগ, যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণ বনশ্রী, ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, তেজঁগাও রেলওয়ে বস্তি, গুলশান, উত্তরা, বেড়িবাঁধ ও গাবতলী এলাকা থেকে এদের গ্রেফতার করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘গ্রেফতারদের কাছ থেকে এক হাজার ৯৬৫ পিস ইয়াবা, ১৭ বোতল ফেন্সিডিল, বিয়ার পাঁচ বোতল, বিদেশি মদ সাত বোতল, দুই কেজি গাঁজা, একটি সেভেন এমএম রিভলবার, আট রাউন্ড গুলি ও ম্যাগাজিন, মোবাইল ফোন তিনটি এবং ৩০ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এরা সারাদেশে ইয়াবার ব্যবসা করত। আসল নাকি নকল জানার জন্য ইয়াবা ও বিদেশি মদ পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের সাঁড়াশি অভিযানে আটক ৩৬ জনের মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবং ১৯ জন মাদকাসক্ত চিহ্নিত করে তাদের চিকিৎসার জন্য মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। তবে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হলেও তারা কিছুদিন পর নানাভাবে বের হয়ে আসছে।’
অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘বর্তমানে সারাদেশে আমাদের মোট এক হাজার ৭০৬ জন কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে অপারেশনাল কর্মকাণ্ডে এক হাজার ১৯১ জন এবং আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২৩৬ জন কর্মরত। লোকবল নিয়োগের জন্য ৮ হাজার ৫০৫ জনের একটি কাঠামো তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি পাস হলে লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে। আমাদের লোকবল বৃদ্ধি পেলে জেলা পর্যায়ে কাজের গতি আরও বাড়বে।’
সারাবাংলা/এসআর/আইজেকে