‘মাদক ব্যবসা না ছাড়লে পরিণতি কী হবে সৃষ্টিকর্তা জানেন’
২৬ জুন ২০১৯ ১৯:১৩
ঢাকা: মাদক ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, মাদকের মতো সর্বগ্রাসী ছাড়ুন অন্য ব্যবসা করুন। না হলে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন আপনাদের পরিণতি কী ভয়াবহ হবে।
বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেট কেআইবি কনভেনশন সেন্টারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশে মাদকের মতো ব্যবসা আর কাউকে করতে দেওয়া হবে না। কাজেই আমরা যাকে যেভাবে পারছি বলছি বুঝাচ্ছি, আপনারা এ পথ থেকে সরে আসেন। অন্য ব্যবসা শুরু করেন। আমরা বলছি, হয় সারেন্ডার করেন নইলে কী পরিণতি হবে তা দেখার অপেক্ষায় থাকেন।’
মাদকসেবীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা মাদক গ্রহণ সেবন করছেন তাদের নিজের জীবন নিজেই শেষ করছেন। আমি বলব, মরণ নেশা থেকে সরে আসুন। কেউ একটানা দুই বছর ইয়াবা সেবন করলে তার কর্মক্ষমতা সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়। সে দাঁড়াতে পারে না। কোনো কাজ করতে পারে না, ঘুমাতে পারে না, মানুষের সঙ্গে কথা বলতেও তার কষ্ট হয়। একঘরে হয়ে যায়। এভাবে একসময় মৃত্যুর পথযাত্রী হয়। মাদক সেবনের ফলে দাম্পত্য জীবন ধ্বংস হচ্ছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাদক যেন দেশে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য সীমান্তে কড়া পাহারা বসিয়েছি। এরপরেও কিছু দুর্গম এলাকা রয়েছে, সেদিক দিয়ে মাদক আসছে বলে মনে করছি আমরা। সেখানকার রাস্তাঘাট উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। আমরা বিজিবি, কোস্টগার্ডকে মাদক প্রতিরোধে শক্তিশালী করছি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে ঢেলে সাজিয়েছি। আগে যেখানে তিন চার জেলা মিলে একজন কর্মকর্তা ছিলেন। এখন সেখানে প্রতি জেলায় কর্মকর্তা বসানো হয়েছে। নতুন আইন হয়েছে। উন্নত যোগাযোগের জন্য সবার হাতে ওয়াকিটকি দেওয়া হয়েছে। যেভাবে আমরা জঙ্গি প্রতিরোধ করেছি, কোণঠাসা করেছি একইভাবে আমরা মাদককেও আয়ত্তে আনার চেষ্টা করছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জরিপে দেখা গেছে যারা মাদক সেবন করেন তাদের বেশির ভাগের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এর নিচের বয়সও রয়েছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও মাদক গ্রহণ করছে। পথশিশুরাও সীসা নিচ্ছে। সবকিছু আমরা দেখছি। মাদক প্রতিরোধে আমরা সব ধরনের কাজ করছি। সারাদেশে ডিজিটাল বিলবোর্ডের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেমিনার অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি মাদক আয়ত্তে আসবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘মাদক নির্মূল করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। আমরা চাহিদা, জোগান এবং পুনর্বাসনের বিষয়ে সমানতালে কাজ করছি। চাহিদা হ্রাসের ক্ষেত্রে আমরা মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি করার দিকে জোর দিচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইউজে/একে