এরশাদের রক্তে ইনফেকশন, এখনই বিদেশে নেওয়া যাচ্ছে না
২৬ জুন ২০১৯ ২৩:১০
ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রক্তে ইনফেকশন দেখা গেছে। এর চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তার বর্তমান যে শারীরিক অবস্থা রয়েছে, তাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়াও সম্ভব নয়।
বুধবার (২৬ জুন) রাতে জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার সকাল ৮টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।
রক্তের হিমোগ্লোবিন ও লিভারের সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ এরশাদ। এর সঙ্গে গত কয়েকদিনের টানা জ্বর নিউমোনিয়ায় রূপ নেওয়ায় এদিন তাকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাকে।
জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বলেন, শারীরিক সমস্যার কারণে প্রতিদিনই সিএমএইচে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান এরশাদ। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে বাসায় চলে আসেন তিনি। তবে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার এখনো উন্নতি হয়নি। তাকে রক্ত দেওয়া হয়েছে। তবে রক্তের ইনফেশনের চিকিৎসায় যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া প্রয়োজন, তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে তাকে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
এরশাদের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছে, এ পরিস্থিতিতে এরশাদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন এরশাদের পরিবারের সদস্যরা। তবে বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতে তাকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে, বুধবার সন্ধ্যার পর সিএমএইচে এরশাদকে দেখতে গিয়েছিলেন তার ছোট ভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখন তার আশপাশে যত কম মানুষ যাওয়া যায়, ততই ভালো। সে কারণে আমিও সরাসরি তাকে দেখতে যাইনি। তাকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে রাখা হয়েছে। তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় (ড্রাউজিনেস) রয়েছেন তিনি।
সাংবাদিকসহ সবার কাছে এরশাদের জন্য দোয়াও চান জি এম কাদের। এসময় তার সঙ্গে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাসহ জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের শেষের দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এরশাদ। অসুস্থতার কারণে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণাতেও অংশ নিতে পারেননি তিনি। ওই অবস্থাতেই ১২ ডিসেম্বর ‘উন্নত চিকিৎসার জন্য’ সিঙ্গাপুরে যান এরশাদ। পরে নির্বাচনে জয়লাভের পর দেশে ফিরে শপথ নেন তিনি। পরে ২০ জানুয়ারি ফের চিকিৎসা নিতে সিঙ্গাপুর যান। দেশে ফেরেন ৪ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকে সিএমএইচেই চিকিৎসা নিচ্ছেন এরশাদ।
এদিকে, এরশাদ পুরোপুরি সুস্থ না হলেও বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে সাড়া ফেলেছেন। অসুস্থ অবস্থাতেই নিজের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি ট্রাস্টে দান করেন তিনি।
এদিকে, গত মার্চে ছোট ভাই জি এম কাদেরকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদ এবং দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন এরশাদ। পরে সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতার পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। সপ্তাহ দুয়েক পরেই অবশ্য জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহাল করেন এরশাদ।
সর্বশেষ গত ৪ মে নিজ বাসভবন ‘প্রেসিডেন্ট পার্কে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ ঘোষণা দেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জি এম কাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
ফাইল ছবি
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
এরশাদ চিকিৎসা জাতীয় পার্টি রক্তে ইনফেকশন সিএমএইচ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ