রণদা প্রসাদ হত্যা মামলা: রাজাকার মাহবুবুরের মৃত্যূদণ্ড
২৭ জুন ২০১৯ ০৯:৫৭
ঢাকা: কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহার হত্যাকারী মাহবুবুর রহমানকে (৬৯) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেন। এর আগে বেলা ১১টায় একাত্তরে ভবানী প্রসাদ সাহাসহ ৭ জনকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগের মামলায় রায় পড়া শুরু করেন আদালত। এসময় ২৩৫ পৃষ্টার রায়ের কিছু অংশ পড়ে শোনান বিচারক।
গত ২৪ এপ্রিল এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন ট্রাইব্যুনাল। দুইমাস পর আজ রায়ের জন্য দিন ঠিক করেন আদালত। মৃত্যূদণ্ডের সাজা পাওয়া আসামি মাহবুবুর বর্তমানে কারাগারে আছেন।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর রানা দাশ গুপ্ত। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।
২০১৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি এ মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠনের জন্য ওই বছরের ১১ মার্চ দিন ঠিক করে দেন। এরপর ২৮ মার্চ এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে দীর্ঘদিন এ মামলার শুনানি শেষে ২৪ এপ্রিল যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২০১৭ সালের ২ নভেম্বর টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করে প্রসিকিউশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত সংস্থা।
রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগে বলা হয়, আসামি মাহবুবুর রহমানের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মুক্তিযুদ্ধের সময় মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। মাহবুবুর রাহমান ও তার ভাই আব্দুল মান্নান সে সময় রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন।
আসামি মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালায়।
অভিযানে রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা, রণদা প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব ও রণদা প্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ সাত জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সবাইকে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষা নদীতে ফেলে দেয়। তাদের লাশ আর পাওয়া যায়নি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি টাঙ্গইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমসের আশপাশের এলাকা, নারায়ণগঞ্জের খানপুরের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও তার আশপাশের এলাকা এবং টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজ এলাকায় অপরাধ সংঘটন করে।
তদন্তে মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অপহরণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ আনা হয়।
রণদা প্রসাদ সাহার পৈত্রিক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা। থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে। সে বাড়ি থেকেই তাকে, তার ছেলে ও অন্যান্যদের ধরে নিয়ে যায় আসামি মাহবুবুর রহমান ও তার সহযোগীরা।
সারাবাংলা/এজেডকে/এমআই/জেডএফ
