করপোরেট কর কমানোর দাবিসহ এফবিসিসিআই‘র ২৫ প্রস্তাব
২৭ জুন ২০১৯ ১৯:১৬
ঢাকা: তৈরি পোশাক ও বস্ত্রখাতের মতো রপ্তানি খাতের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর আড়াই শতাংশ হারে কমানোর দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
একইসঙ্গে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানির স্টক ডিভিডেন্ড এবং কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন রির্জাভের ৫০ শতাংশের বর্ধিত অংশের ওপর ১৫ শতাংশ কর প্রত্যাহারসহ বাজেট পরবর্তী ২৫টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাট, আয়কর এবং আমদানি শুল্ক হারে প্রয়োজনীয় বেশকিছু সংশোধনীর দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে (২৭ জুন) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এফবিসিআই-এর বাজেট পরবর্তী এক অনুষ্ঠানে সংঠনের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়। অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই অধিভূক্ত বিভিন্ন চেম্বার এবং অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিবৃন্দ স্ব-স্ব খাতের পক্ষে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি, সম্মানিত অতিথি ছিলেন সিনিয়র সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এনডিসি ও এসডিজিবিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআিই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘শিল্পখাতে বিনিয়োগ, উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী শিল্পের বহুমুখী প্রসার, প্রণোদনা ও অধিক প্রতিযোগিতা সক্ষম করাকে বাজেটে উন্নয়ন কৌশল হিসাবে নেওয়া হয়েছে, যা ইতিবাচক। এছাড়াও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, আরঅ্যান্ডডি, ইনোভেশন, মানবসম্পদ, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানকে গতিশীল করবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে শিল্পের কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতি থেকে আগাম কর প্রত্যাহার, টার্নওভার সীমা ৩ কোটি টাকা করা হয়েছে। উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার এক কোটি টাকার পরিবর্তে ৩ (তিন) কোটি টাকা করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া কর কর্মকর্তার জব্দকরণ ও আটক করার স্বেচ্ছাক্ষমতা ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার ক্ষমতা বাতিলের দাবি জানাই।’
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে আইন প্রতিপালনে অনিয়মে জরিমানার হার ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এই জরিমানার হার আগের মত বহাল রাখা হোক। এছাড়াও প্রাপ্ত নগদ ভর্তুকির ক্ষেত্রে অগ্রিম কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ বহাল রাখতে হবে এবং সকল রপ্তানিখাতে একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।’
শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, শিল্পের কাঁচামালের ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়াও মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে ৫% অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করা দরকার।
তিনি বলেন, ‘এফবিসিসিআই অধিভূক্ত ১০৬টি চেম্বার, ৪০০টি অ্যাসোসিয়েশন এবং স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে বাজেট পরবর্তী মূল্যায়ন করা হয়েছে। বাজেট চূড়ান্ত অনুমোদনের আগেই আমাদের মূল্যায়ন যথাযথভাবে বিবেচনা করা হবে বলে আশা করি।’
সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘আমরা এফবিসিসিআই-এর প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করব। কারণ এই সরকার ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব সরকার। ফলে এফবিসিসিআই‘র প্রস্তাবগুলো সংশোধনী বাজেটে সংশোধন করার চেষ্টা করব। আর কোনো কারণে তা সংশোধন সম্ভব না হলে বাজেট পাসের পরেও কমানোর সুযোগ রয়েছে।’
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। তাই প্রস্তাবিত বাজেটে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’
এছাড়াও অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএ-এর সভাপতি রুবানা হক, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসির এবং বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাট্রিজের সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বক্তৃতা করেন।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম