চট্টগ্রামে আ.লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি
২৯ জুন ২০১৯ ১৭:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজারে আওয়ামী লীগের স্থানীয় দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ এবং কমপক্ষে ৩ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (২৯ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লালখান বাজার মোড় থেকে বাঘঘোনা মোড় পর্যন্ত এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়। ওই এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী জানিয়েছেন, লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলালের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়।
গতকাল (শুক্রবার) গভীর রাতে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বেলাল গ্রুপের যুবলীগ কর্মী সাইদুল ইসলামসহ তিনজনের ওপর আকস্মিক হামলা পরে সংঘর্ষের সূত্রপাত। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন সাইদুল।
এর প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে লালখান বাজার মোড়ে কর্ণার হোটেলের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে বেলালের অনুসারীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মানববন্ধনে মিছিল নিয়ে আসার সময় তাদের ওপর ইটের টুকরো নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও শোনা যায়। তখন মানববন্ধন ভণ্ডুল হয়ে যায়। দুই গ্রুপ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তবে পরিস্থিতির অবনতি হলে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়। পুলিশ লাঠিচার্জের এক পর্যায়ে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে দুইপক্ষ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট পর তারা আবারও সংঘবদ্ধ হয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু করলে পুলিশ মাসুমের অনুসারীদের লাঠিচার্জ করে বাঘঘোনার দিকে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে বেলালের অনুসারীরা দিদারুল আলম মাসুমের ব্যক্তিগত অফিসের সামনে জড়ো হয়ে ইট-পাথর নিক্ষেপ করে। মাসুমের অফিসের সামনে রাখা মোটর সাইকেলও তারা ভাঙচুর করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রণব চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। একপক্ষ অন্যপক্ষকে লক্ষ্য করে ইটের টুকরা নিক্ষেপ করেছে। উভয়পক্ষে শতাধিক তরুণ-যুবক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ায় তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমাদের কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়তে হয়েছে। আমরা গুলি না ছুড়লে এখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো।’
এদিকে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দু’জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক হামিদুর রহমান।
প্রণব চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ছোড়া গুলির স্প্লিন্টারবিদ্ধ হয়েছেন দু’জন। এর মধ্যে একজন রিকশাচালক।’
সংঘর্ষের পর বেলালের অনুসারীরা লালখান বাজার মোড়ে এবং মাসুমের অনুসারীরা বাঘঘোনার দিকে অবস্থান নিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তাদের মাঝে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। দু’পাশ থেকে মাঝে মাঝে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে- জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সারাবাংলা/আরডি/এটি