Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শাহীনের জন্য সব করল ছাত্রলীগ


৩০ জুন ২০১৯ ০৯:২৭

ঢাকা: যশোরে ছিনতাইকারীদের হাতে আহত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কিশোর চালক শাহীন মোড়লকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সংগঠনটির কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের চেষ্টায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহীনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা যায়।

রোববার (৩০ জুন) ভোরে নিজের ফেসবুক পোস্টে একথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন।

ফেসবুক পোস্টে খোকন জানান, গুরুতর আহত কিশোর শাহীনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করেন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দেব নন্দী, দেবাশীষ আইচ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শান্তসহ ২০ জন নেতাকর্মী। এমনকি শাহীনের জন্য রক্ত জোগাড় করা, তার (আশরাফুল আলম খোকন) সঙ্গে কথা বলে ঢামেকে অস্ত্রোপচার ও আইসিইউ’র ব্যবস্থা করার কাজটিও করেছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী তার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াও চিকিৎসার বিষয়ে জানতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছিলেন বলেও জানান আশরাফুল আলম খোকন।

শনিবার (২৯ জুন) দিবাগত রাত ৩টায় শাহীনের অস্ত্রোপচার শেষে হওয়ার পর তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর এই উপ প্রেসসচিব। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, ৭২ ঘন্টা না গেলে কিছু বলা যাবে না। তবে শাহীন ও তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতাসহ সবরকমের সাহায্যই করা হয়েছে বলে জানান আশরাফুল আলম খোকন।

সারাবাংলার পাঠকদের জন্য আশরাফুল আলম খোকনের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে দেওয়া হলো: ‘সমালোচনা করে, উহ-আহ দুঃখ প্রকাশ করে আপনারা তখন হয়তো ঘুমিয়ে আছেন। টিভিতে সংবাদ দেখেছেন, টকশো দেখেছেন কিংবা হিন্দি সিরিয়াল দেখে ক্লান্ত আপনি হয়তো ভালো মন্দ খেয়ে শান্তির ঘুম দিয়েছেন। সারাদিনের খাটাখাটুনি শেষে শাহীনের মাও হাসপাতালের বারান্দায় গা এলিয়ে দিয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

কিশোর শাহীন ঢামেকে ভর্তি, জরুরি অস্ত্রপচার লাগবে

‘রাত আড়াইটায় যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে গেলাম তখন জেগে আছে অগোছালো জামা-কাপড় পড়া কিছু তরুণ। এরা সবাই ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী। ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দেব নন্দী, দেবাশীষ আইচ ও ঢাবি’র বঙ্গবন্ধু হলের জিএস মেহেদী হাসান শান্তসহ ২০ জন।’

‘ছাত্রলীগকে যারা কথায় কথায় গালিগালাজ করে জাতে ওঠার চেষ্টা করেন তারা একটু জেনে রাখেন। এই শাহীনকে যশোর থেকে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন ছাত্রলীগের কর্মীরাই। কোনো জাতি উদ্ধারকারী সমালোচক এগিয়ে আসেনি। শাহীন কিন্তু ছাত্রলীগের কারো আত্মীয়ও নয়। ঢাকা মেডিকেলে আনার পর শাহীন এর জন্য এবি পজেটিভ রক্ত জোগাড় করেছে এই জয়দেব নন্দীরাই। রাতে যখন সোয়া ১২ টার সময় জয়দেব নন্দী আমাকে ফোন করে জানায় তার অপারেশন করতে হবে এবং এরপর আইসিইউ লাগবে। সাথেই সাথেই আমি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার এসএম খুরশীদ উল আলম ও আওয়ামীলীগ নেতা সুভাষ সিংহ রায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে অপারেশন ও আইসিইউ এর ব্যবস্থা করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াও তাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছিলেন।’

‘অপারেশন শেষে রাত তিনটা থেকে শাহীনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন, ৭২ ঘন্টা না গেলে কিছু বলা যাবেনা। অপারেশন চলার সময় যখন শাহীনের মা ও চাচার সাথে কথা বলি, ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা শুধু একটি কথাই বলেছেন, আমরা আর নিজেদেরকে অসহায় মনে করছিনা। আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। আর্থিক সহযোগিতাসহ সবরকমের সাপোর্টই দেওয়া হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে যাত্রীবেশে কয়েকজন ছিনতাইকারী সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ায় যাওয়ার কথা বলে কিশোর শাহীনের অটোরিকশায় ওঠে। শাহীন তাদের নিয়ে ধানদিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। এরপর ধানদিয়া গ্রামের পথে ঢুকে একটি পাটক্ষেতের পাশে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা শাহীনের মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে জ্ঞান ফিরে শাহীন কান্নাকাটি শুরু করলে স্থানীয়রা সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় খবর দেয়। সেখান থেকে তাকে খুলনার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

টানা ৩০ ঘণ্টা খুলনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরও অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় শনিবার তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।

সারাবাংলা/এসএমএন

আশরাফুল আলম খোকন কিশোর শাহীন শাহীন মোড়ল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর