জলাধারে পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার
১ জুলাই ২০১৯ ০৫:০৯
ঢাকা: ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে জলাধার (পুকুর, দীঘি ও নালা) পুনঃখনন করে পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ জন্য দেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের ৫টি জেলায় ‘পুকুর পুনঃখনন ও ভূ-উপরিস্থ পানি উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এতে খরচ ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পুকুর, দীঘি ও নালায় পানি সংরক্ষণ করে ৩ হাজার ৫৮ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ করে প্রতিবছর অতিরিক্ত প্রায় ১৮ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন করা যাবে। এর পাশাপাশি মাছ চাষের সুযোগ সৃষ্টিসহ বহুমুখী কাজে পুকুরের পানি ব্যবহার করা যাবে এবং প্রান্তিক চাষিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, প্রকল্পটির প্রস্তাব পাওয়ার পর এ বছরের ১৭ জানুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। ডিপিপিটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তপক্ষ (বিএএমডিএ)।
কৃষিমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়া ও নাটোর জেলার ৪৩টি উপজেলায় বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এ অঞ্চলে বছরে গড় বৃষ্টিপাত কম এবং সেচ কাজে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক খাস পুকুর ও জলাশয় রয়েছে। যেগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে প্রায় ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানির ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। এসব পুকুর-জলাশয় পুনঃখনন করা হলে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা যাবে। আর এই পানি সম্পূরক সেচ, মাছ চাষ ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করা যাবে। এতে ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমবে। ’
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ৭১৫টি পুকুর ও ১০টি দীঘি পুনঃখনন, ৮৫টি সৌরশক্তি চালিত লো-লিফট পাম্প স্থাপন, ৮০টি ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণ, ৮৫টি প্রি-পেইড মিটার ও ৯ হাজার মিটার ফিতা পাইপ ক্রয় এবং এক লাখ ৫ হাজার বৃক্ষরোপণ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকার জলাধারে পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি ফসলের উৎপাদন বাড়বে। এছাড়া সেচ সুবিধা সম্প্রসারণসহ বহুমুখী কাজে পুকুরের পানি ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। ’
সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম