ঢাবি শিক্ষকের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন
১ জুলাই ২০১৯ ০৫:৫২
ঢাকা: ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
রোববার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য সারাবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ট্রাইবুনালের সদস্যরা হলেন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ ও ড. মো. লিয়াকত হোসেন মোড়ল। অভিযুক্ত ব্যক্তিও এই ট্রাইবুনালে একজন সদস্য নিযুক্ত করতে পারবেন।
অধ্যাপক মোরশেদ হাসান খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের প্যানেল ‘সাদা দল’র যুগ্ম আহ্বায়ক।গত বছরের ২৬ মার্চ দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকায় ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে এক নিবন্ধ লেখেন তিনি।
তিনি লেখেন, ‘আওয়ামী নেতাদের বেশিরভাগই তাদের পরিবার পরিজনসহ ভারতে চলে গেলেন, এ দেশবাসীকে মৃত্যু ফাঁদে ফেলে দিয়ে নেতৃত্বহীন অবস্থায়। যাকে ঘিরে এ দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখত সেই শেখ মুজিবুর রহমানও। স্বাধীনতার ডাক এসেছিল শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর, তার আগে নয়। আমার জানা মতে তিনি কোনো স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি।’
পরে অবশ্য তিনি লেখাটির জন্য ক্ষমা চান এবং লেখাটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
তবে এর আগে ২০১৬ সালে ৩০ মে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় ‘স্মৃতিময় জিয়া’ শিরোনামে এক লেখাতেও অধ্যাপক মোরশেদ হাসান খান বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে তিনি লিখেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে পাক-হানাদার বাহিনী যখন এ দেশের নিরীহ-ঘুমন্ত মানুষেরওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্বিচারে গণহত্যা চালায় তখন আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের পরিবার-পরিজনসহ ভারতে পালিয়ে যান। শেখ মুজিবুর রহমানও এ দেশবাসীকেমৃত্যুর ফাঁদে ফেলে দিয়ে পাক-হানাদার বাহিনীর কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন।’
গত বছরের ইতিহাস বিকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ এর এপ্রিল মাসে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট মোর্শেদ হাসান খানকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করে ও প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
কমিটি গত মাসের ২৮ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তারা অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পায়। এর পর ৩০ এপ্রিলের সিন্ডিকেটে মোর্শেদ হাসান খানের রিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা ঠিক করতে অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দীনকে দায়িত্ব দেন উপাচার্য। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববারের (৩০ জুন) সিন্ডিকেট সভায় ট্রাইবুনাল গঠন করা হলো।
এর আগে ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫ তম জন্মবার্ষিকীর স্মরণিকায় ইতিহাস বিকৃতি করা হয়। এই স্মরণিকায় ‘স্মৃতি অম্লান’ শিরোনামে একটি নিবন্ধেবিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে দেশের ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্মরণিকাটি বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে। স্মরণিকার সম্পাদক ও ওই নিবন্ধের লেখক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে তার পদ থেকে অব্যাহতি পরে চাকরিচ্যুত করা হয়।
সারাবাংলা/কেকে/এজেড