গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৭ জুলাই হরতাল
১ জুলাই ২০১৯ ১৬:৪২
ঢাকা: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ৭ জুলাই সারাদেশে আধা বেলা হরতাল ডেকেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
সোমবার (১ জুলাই) সকাল ১১টায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে কর্মসূচি নিতে বৈঠকে বসে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পরিচালনা পর্ষদ।বৈঠক শেষে জানানো হয়, সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা অযৌক্তিক। এর প্রতিবাদে ৭ জুলাই সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল পালন করবে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
পরে বিকেলে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ করে একাধিক বাম সংগঠন। সভা-সমাবেশ থেকে তারা কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন। নিজের অধিকার আদায়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
আঁতাত করে পকেট ভরাতেই গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি: মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আজ আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ করছি। কমিউনিস্ট পার্টি আজ থেকে শুরু করে টানা ৬ জুলাই পর্যন্ত বিক্ষোভ করবে। দাবি পূরণ না হলে ৭ জুলাই সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সারাদেশে আমরা শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন করব।’ এরপরও যদি সরকার গ্যাসের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার না করে তাহলে পরবর্তীতে সিপিবি ‘সারাদেশ অচল’ করে দেওয়ার মত কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
একই সময়ে প্রতিবাদ দেখিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। ওই প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, সরকার অবৈধভাবে গ্যাসের দাম ৩২ শতাংশ বাড়িয়েছে। এতে করে গ্যাস নির্ভর শিল্প-কারখানার উৎপাদন খরচ বাড়বে। খেটে খাওয়া মানুষ নিষ্পেষিত হবে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির ঢাকা মহানগরের সভাপতি আবুল হোসাইন, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোস্তফা রতন ও কামরুল আহসান।
এর আগে, বিকাল চারটায় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ দেখায় গণসংহতি আন্দোলনও। পরে সমাবেশ শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি প্রেসক্লাবের সামনে থেকে হাইকোর্ট মোড় হয়ে কাকরাইল মোড় ঘুরে এসে প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে আজ থেকে তা কার্যকর করছে। আদালতের নির্দেশনাকে কৌশলগতভাবে পাশ কাটিয়ে কিভাবে জনগণের ঘাড়ে একের পর এক দাম বৃদ্ধির দায় চাপিয়ে দেওয়া যায়? এই সরকার বেপরোয়াভাবে সেই উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা বারবার বলেছি, গ্যাসের দাম বাড়ায় জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠবে, দেশের শিল্প কলকারখানা, কৃষি, সামগ্রিকভাবে আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থা দারুণভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তারা প্রতিযোগিতায় মার খাবে।
সমাবেশে শ্রমিক নেত্রী তাসলিমা খানম বলেন, সরকারের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবকে আমরা প্রত্যাখান করছি। সরকারের প্রতি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবকে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি। নতুবা পেশাজীবী ও শ্রমিকদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। একই সংগঠনের ফিরোজ আহমেদ বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি শুধু দাম বৃদ্ধি নয়, এর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গভীর প্রভাব রয়েছে। অচিরেই দেখা যাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। উন্নয়নের নামে সরকার লুণ্ঠন করছে বলেও মন্তব্য এই গণসংহতি নেতার।
রোববার (৩০ জুন) গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিকসহ সব ধরনের গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সংস্থাটি জানায়, সব ধরনের গ্যাসের দাম গড়ে বেড়েছে ৩২ দশমিক ৮০ শতাংশ।
বিইআরসি’র ঘোষণা অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে রান্নাঘরে ব্যবহৃত এক বার্নারের চুলার জন্য গ্যাসের বিল দিতে হবে ৯২৫ টাকা, যা আগে দিতে হতো ৭৫০ টাকা। আর দুই বার্নারের চুলার জন্য গ্যাসের বিল দিতে হবে ৮০০ টাকার জায়গায় ৯৭৫ টাকা। এছাড়া, সিএনজি অটোরিকশায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম করা হয়েছে ৪৩ টাকা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এসএমএন/জেএএম