Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সোয়া লাখ রোহিঙ্গার দায়িত্ব নিতে চায় তুরস্ক


৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৪:৩৭

এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর থেকে সোয়া লাখ দায়িত্ব নিতে চায় তুরস্ক। এই বিষয়ে তুরস্কের ঢাকা মিশন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে ঢাকার তরফ থেকে এখনো কিছু জানান হয়নি।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, তুরস্কের বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওজতুর্ক এক চিঠিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানান, কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী থেকে সোয়া লাখ রোহিঙ্গার দায়িত্ব নিতে চায় দেশটি। ওই সোয়া লাখ রোহিঙ্গার জন্য আবাসন ব্যবস্থা, খাদ্য ও শিক্ষা সহায়তা দিতে আগ্রহী তুরস্ক।

চিঠিতে আরও জানান হয়, ওই সোয়া লাখ রোহিঙ্গার জন্য আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে আবাসন সহায়তা দিতে চায় তুরস্ক। গড়ে প্রতিটি পরিবারে ৫ জন করে সদস্য ধরা হয়েছে। এই হিসাবে দেশটি ২৫ হাজার ঘর-বাড়ি গড়ে দিতে চায়। যেখানে প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য দুইটি ঘর, একটি রসুই ঘর থাকবে। আর ৪/৫টি পরিবারের জন্য একটি করে টয়লেট ও স্নানাগারের ব্যবস্থা করা হবে। এই সোয়া লাখ রোহিঙ্গার জন্য খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সুবিধাও থাকবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওজতুর্ককে বলা হয়েছিল যে তারা এই সোয়া লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে নিয়ে যাক। কিন্তু ঢাকার এই প্রস্তাবে আঙ্কারা রাজি হয়নি। রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওজতুর্ক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানান, সোয়া লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে নিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে সোয়া লাখ মানুষকে আবাসন, খাদ্য, চিকিৎসা এবং শিক্ষা সুবিধা দিতে তুরস্ক প্রস্তুত রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, আবাসন ব্যবস্থাটি মূলত অস্থায়ী কিন্তু উন্নতমানের হবে। ঢাকা রাজি থাকলে আঙ্কারা থেকে জাহাজে করে আবাসন ব্যবস্থার উপকরণ কক্সবাজারে পাঠানো হবে। এই আবাসন ব্যবস্থার ঘর-বাড়িগুলো অস্থায়ী কাঠামো। যা যেকোনো সময় খুলে ফেলা যাবে বা যেকোনো সময় স্থাপন করা যাবে। প্রতিটি ঘরের উপরে সোলার প্যানেল থাকবে, যাতে বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া যায়। প্রতিটি ঘরের সঙ্গে ইন-বিল্ট টেলিভিশনসহ আনুষঙ্গিক বৈদ্যুতিক সুবিধা থাকবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক নজরুল ইসলামের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আঙ্কারার প্রস্তাবের বিপরীতে ঢাকা এখনো কিছু জানায়নি।’

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতা জোরালো হওয়ার পর হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের একাধিক আশ্রয় শিবিরে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ঠাঁই নিয়েছে।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এ ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অবহিত করেছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

সারাবাংলা/জেআইএল/আইজেকে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর