Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশেই সৌদি ইমিগ্রেশন সুবিধা পাবেন হজযাত্রীরা


৩ জুলাই ২০১৯ ২০:২৬

ঢাকা: ৪ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে হজ ফ্লাইট। এবারই প্রথম সৌদি আরবের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সুবিধা বাংলাদেশেই পাচ্ছেন হজযাত্রীরা। বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-৩০০১ এর ৪১৯ যাত্রীর প্রি-অ্যারাইভাল শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে এই কাজের সূচনা হবে। ফ্লাইটটি সকাল সোয়া ৭টায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এদিন, বাংলাদেশ বিমানের চারটি ফ্লাইটের এই ইমিগ্রেশন ঢাকায় শেষ হবে। বিমান মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সুবিধা হচ্ছে, সৌদি আরবে অবতরণের পর দেশটিতে প্রবেশের জন্য বিমানবন্দরের যে ইমিগ্রেশন হওয়ার কথা সেটি বাংলাদেশেই বিমানে ওঠার ঠিক আগে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্পন্ন হবে।

বিমান সচিব মহিবুল হক এ প্রসঙ্গে সারাবাংলা’কে বলেন, ‘এবারই প্রথম সৌদি ইমিগ্রেশন সুবিধা আমাদের হজযাত্রীরা দেশেই পাচ্ছেন। ফলে, সৌদিতে গিয়ে ইমিগ্রেশন নিয়ে কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না। তিনি জানান, এবার ফ্লাইট সিডিউল বিপর্যয় যাতে না হয় সেজন্য আমরা সর্তক রয়েছি। পাশাপাশি আমাদের কর্মকর্তারা হজ যাত্রার উপর বিশেষ নজর রেখেছেন।’

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এ বছর প্রথমবারের মত শুরু হওয়া প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সুবিধা পাচ্ছেন মোট ১৪৯টি ফ্লাইটের হজযাত্রীরা। এরমধ্যে বাংলাদেশ বিমানের ১২১টি এবং সৌদি এয়ারলাইন্সের ২৮টি ডেডিকেটেড হজফ্লাইট রয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম চালু হওয়ার কারণে সব ডেডিকেটেড ফ্লাইটকে এই সুবিধার আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে, আগামী বছর ফ্লাইটের সংখ্যা আরো বাড়বে এবং ক্রমান্বয়ে সব ফ্লাইটকে এই সুবিধার আওতায় আনা হবে।

মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার পর বাংলাদেশকে এই সুবিধা দেওয়ায় সৌদি আরবের কারিগরিদলসহ উচ্চস্তরের প্রতিনিধি দল দু’দফায় বাংলাদেশ সফর করেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আশকোনা হজক্যাম্প এবং বিমানবন্দরের ১১ নম্বর গেটে ইমিগ্রেশন সেন্টার স্থাপনের জায়গা পরিদর্শন করে যান। বিমানবন্দরে যে সেন্টারে প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন শেষ হবে সেটির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে। প্রয়োজনীয় কারিগরি যন্ত্রপাতি ও টেকনিক্যাল জনবলও সৌদি আরব থেকে এরইমধ্যে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, সেন্টারটি এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আগামীকাল (৪ জুলাই) থেকে চলতি বছরের হজ ফ্লাইট শুরু হচ্ছে। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনই সর্বোচ্চ ছয়টি ফ্লাইটের সৌদি আরবের প্রি ইমিগ্রেশন শেষ হবে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১১ নম্বর গেটে স্থাপিত সৌদি আরবের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সেন্টারে এই ইমিগ্রেশন শেষ হবে। তার আগে হজযাত্রীদের যথানিয়মে ডিপার্চার ইমিগ্রেশন শেষ হবে।

ইমিগ্রেশনের আগে প্রত্যেক হজযাত্রীর হাতের ১০ আঙুলের ছাপ নেওয়া, পাসপোর্ট স্ক্যান ও ছবি তোলা, লাগেজের নির্দিষ্ট রঙ্গের স্টিকার লাগাতে হবে হজযাত্রীদের। আশকোনা হজক্যাম্পে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভ্রমণকারী হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন ও সর্বশেষ বিমান ১১ নম্বর গেটে স্থাপিত সৌদি আরবের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন কাউন্টারে সৌদি ইমিগ্রেশন শেষ করতে হবে। এই ইমিগ্রেশন শেষ করার পর ওইসব ফ্লাইটের হজযাত্রীদের জেদ্দা বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা আর বসে থাকতে হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। যাত্রীদের বিমান থেকে সোজা নামিয়ে হজ টার্মিনালে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে। এই সুবিধার জন্য নির্বাচিত ফ্লাইটের হজযাত্রীদের ফ্লাইটের কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা আগে অবশ্যই ঢাকা আশকোনা হজক্যাম্পে রিপোর্ট করার জন্য বলা হয়েছে।

৪ জুলাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চারটি ফ্লাইটের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন শেষ হবে। ফ্লাইটগুলো হলো, বিজি-৩০০১, বিজি-৩১০১, বিজি-৩২০১ ও বিজি-৩৩০১। ৫ জুলাই বিমানের ছয়টি, ৬ জুলাই বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ৭ জুলাই বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারের দু’টি, ৮ জুলাই বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ৯ জুলাই বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারের দু’টি, ১০ জুলাই বিমানের তিনটি ও সৌদি এয়ারের দু’টি, ১১ জুলাই বিমানের পাঁচটি, ১২ জুলাই বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ১৩ জুলাই বিমানের পাঁচটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ১৪ জুলাই বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারেরএকটি, ১৫ জুলাই বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ১৬ জুলাই বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ১৭ জুলাই বিমানের তিনটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ১৮ জুলাই বিমানের চারটি, ১৯ জুলাই বিমানের একটি সৌদি এয়ারের দু’টি, ২০ জুলাই বিমানের দু’টি, ২১ জুলাই বিমানের তিনটি, ২২ জুলাই বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ২৩ জুলাই বিমানের চারটি, ২৪ জুলাই বিমানের চারটি, ২৫ জুলাই বিমানের চারটি, ২৫ জুলাই বিমানের পাঁচটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ২৬ জুলাই বিমানের দু’টি ও সৌদি এয়ারের তিনটি, ২৭ জুলাই বিমানের তিনটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ২৮ জুলাই বিমানের পাঁচটি ও সৌদি এয়ারের ১টি, ২৯ জুলাই বিমানের তিনটি ও সৌদি এয়ারের তিনটি, ৩০ জুলাই বিমানের দু’টি ও সৌদি এয়ারের একটি, ৩১ জুলাই বিমানের চারটি, ১ আগস্ট বিমানের তিনটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ২ আগস্ট বিমানের চারটি ও সৌদি এয়ারের একটি, ৩ আগস্ট বিমানের তিনটি, ৪ আগস্ট বিমানের তিনটি ও সৌদি এয়ারের দু’টি এবং ৫ আগস্ট বিমানের চারটি ফ্লাইটের প্রি-অ্যারাইভাল ডিপার্চার হবে।

এ বছর বাংলাদেশি হজযাত্রীর কোটা এক লাখ ২৮ হাজার ১৯৮টি। হজ চুক্তি অনুযায়ী এর অর্ধেক বাংলাদেশ বিমান এবং বাকি অর্ধেক সৌদি এয়ারলাইন্স পরিবহন করবে। এরইমধ্যে প্রায় ৯৯ ভাগ বিমান টিকিট হজযাত্রীদের নামে ইস্যু করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ। বিমান হজ ও শিডিউল ফ্লাইটে মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ জনকে পরিবহন করবে। চট্টগ্রাম থেকে ১৯টি ও সিলেট থেকে তিনটিসহ আসা-যাওয়ায় বিমানের মোট ফ্লাইট পরিচালিত হবে ৩৬৫টি।

সারাবাংলা/এইচএ/জেএএম

প্রথম হজ ফ্লাইট হাজযাত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর