নদী হবে জীবিকার উৎস: নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
৬ জুলাই ২০১৯ ১৪:৪১
ঢাকা: নদীকে জীবিকার উৎস হিসেবে তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সময়ের সাথে সাথে নদীর নাব্যতা ও পরিবেশ হারিয়ে যেতে বসেছে। অতীতের সরকারের মতো নদীকে বিলীন নয়, বরং নদী হয়ে উঠবে জীবিকার উৎস।’
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বুড়িগঙ্গার তীরের খোলামোড়া ঘাট এলাকায় আয়োজিত নদী রক্ষা প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় সীমানা পিলার ও আনুষাঙ্গিক কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নদীর নাব্যতা না থাকার কারণেই সামান্য পাহাড়ি ঢলে সারাদেশ ডুবে যাচ্ছে, তাই এসব নদীতে রক্ষা করতে হবে, নদীর খনন করতে হবে। বুড়িগঙ্গা-তুরাগ এমন একটি পরিবেশ হবে, যেখানে মানুষের জীবিকার উৎস হবে এই নদীগুলো।‘
নদীর তীরভূমি দখল মুক্ত করতে অব্যাহত উচ্ছেদ অভিযানে নদীর জায়গায় ৪৮টির বেশি মসজিদ পাওয়া গেছে। প্রথমে মসজিদ নির্মাণ করে জায়গাগুলোকে দখলের চেষ্টা করা হয়েছিল। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মানের মাধ্যমে নদী দখলের বিরোধিতা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কোন সরকারি জায়গায় অথবা বিতর্কিত জায়গায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা মসজিদ করার অনুমতি দেয়নি ইসলাম ধর্ম।‘
বুড়িগঙ্গাকে দখলমুক্ত করতে জনগণের সার্বিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী। সেই সাথে দখলদারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নদী দখলমুক্ত করতে যারাই বাঁধা দেবে, তাদেরকে কোনোভাবেই রেহাই দেওয়া হবে না। ছাড় দেওয়া হবে না।‘
তিনি বলেন, ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা তোমার আমার ঠিকানা, এটা ছিল একসময় আমাদের পরিচয়, কিন্তু আমাদের সেই পরিচয় হারিয়ে যেতে বসেছে, আমাদের বুড়িগঙ্গা নদী শুকিয়ে গেছে, হারিয়ে যাচ্ছে। নদী দখলের ব্যাপারে রাষ্ট্র পূর্বে কোনো যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি, তাই নদীগুলো দখল করেছে, সাথে সাথে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত বেদখল হয়েছে।‘
‘৭৫ পরবর্তীতে জিয়া, এরশাদ, খালেদা সরকার লুটপাট করেছে, নদী দখলে সহযোগিতা করেছে, আমরা সেই নদী দখলমুক্ত করব।‘ যোগ করেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান এয়ার কমোডোর এম মাহবুব-উল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এছাড়া, অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম, ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. কামরুল ইসলাম, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল সালাম, পরিবেশবিদ আবুল মকসুদ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শুধুই বুড়িগঙ্গা নদী নয়, সব নদী দখলমুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা ও নির্দেশে এই কাজ অবশ্যই এগিয়ে নেওয়া হবে।‘
‘বুড়িগঙ্গা হবে আনন্দ বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু, আমাদের টেন্স নদী দেখার জন্য লন্ডন যেতে হবে না, বুড়িগঙ্গা গেলেই হবে।‘ বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
৫৫ কোটি টাকা খরচে ২০২০ সালের মধ্যে নদীর চারপাশে ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে তৈরির কাজ শেষ হবে বলে তিনি জানান।
দখলদারদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি নদী দখল করার চিন্তা করেন তাহলে ভুল করবেন। এখন আগের সরকার নয়, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। দখলের চেষ্টা করলে যথাযথ বিচার করা হবে।’
সারাবাংলা/এমএমএইচ/জেএএম