সাগরে ভেসে আসা ডলফিনটিকে ‘মেরে’ গাছে ঝুলিয়ে রাখল
৭ জুলাই ২০১৯ ১৯:১৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিপন্ন প্রজাতির একটি মৃত ডলফিন গাছের সঙ্গে ঝোলানো অবস্থায় উদ্ধার করেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন। বঙ্গোপসাগরে ভেসে আসা ডলফিনটিকে হত্যা করে তেল সংগ্রহের জন্য গাছের সঙ্গে ঝোলানো হয়েছিল বলে অভিযোগ পেয়েছে প্রশাসন।
শনিবার (৬ জুলাই) সীতাকুণ্ড উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের গোলাবাড়িয়া এলাকায় সাগর সংলগ্ন বেড়িবাঁধের কাছে ডলফিনটি পাওয়া গেছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন রায় সারাবাংলাকে জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন—তিনদিন আগে বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে ধরা পড়ে ডলফিনটি। তিনি ৩ হাজার টাকায় সেটি অলিউল্লাহ নামে একজনের কাছে বিক্রি করেন। অলিউল্লাহসহ কয়েকজন কবিরাজি ওষুধের ব্যবসা করে। তারাই মূলত তেল সংগ্রহের জন্য সেটি গাছে ঝুলিয়ে রাখে।
‘তিনদিন আগে ডলফিনটি ধরা পড়ার পরেই সেটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। এরপর গাছে ঝোলানো হয়। আমরা যখন ঘটনাস্থলে যাই, তখন সেটিতে পচন দেখা গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে- সেটি আগেই মেরে ফেলা হয়েছে। রাতে প্রবল বৃষ্টির কারণে সেটিকে উদ্ধার করলেও পুঁতে ফেলা যায়নি। ডলফিনটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জিম্মায় রাখা হয়েছিল। আজ (রোববার) সকালে বেড়িবাঁধে সেটিকে পুঁতে ফেলা হয়েছে। মৃত ডলফিনটি থেকে প্রচুর দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল’— বলেন ইউএনও।
তিনি আরও বলেন, ‘সীতাকুণ্ডতে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নেই। সেজন্য বন কর্মকর্তার মাধ্যমে বিপন্ন প্রাণী হত্যার অভিযোগে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন-২০১৭ এর ৪১ ও ৪২ ধারায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে। ডলফিনটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে নাকি সেটাকে হত্যা করা হয়েছে, সেটা মামলা দায়েরের পর তদন্ত হবে।’
তবে ডলফিনটি সংগ্রহের সঙ্গে জড়িতরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও মিল্টন রায়।
জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইউএনও মিল্টন জানান, ‘বঙ্গোপসাগরে ভেসে আসা ডলফিনটি গাঙ্গেয় ডলফিন প্রজাতির। স্থানীয়ভাবে একে বলা হয় হুতুম বা শুশুক।’
ইংরেজিতে একে বলা হয় Ganges River Dolphin; এর বৈজ্ঞানিক নাম Platanista gangetica । ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) গাঙ্গেয় ডলফিনকে বিপন্ন হিসেবে লাল তালিকায় রেখেছে। ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুসারে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই