ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত কাদের সিদ্দিকীর
৮ জুলাই ২০১৯ ১৪:৫২
ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। এ সময় তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব বা ঠিকানা খোঁজার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে জনগণের সকল সমস্যায় তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকারে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নতুন উদ্যমে পথচলা শুরু করবে। জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া বা নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়া এমন শব্দ ব্যবহার আমরা করিনি। কিন্তু আমরা নতুন উদ্যমে নতুন করে পথ চলবো।’
সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। এসময় দলটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী, মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকীসহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছে না। নির্বাচনের পর গত ৭ মাস জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ সময় ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে নতুন জোট গঠন করবেন কিনা উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমরা সবার সঙ্গে চলতে চাই। জাতীয় স্বার্থে যা করতে হয় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ তাই করবে। তবে ঐক্যফ্রন্টের বর্তমান তৎপরতার সঙ্গে থাকা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। পরবর্তীতে এই জোট জাতীয় ঐক্য গঠনে ভূমিকা রাখতে পারেনি। সঠিকভাবে চলতে পারেনি। ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে নির্বাচন হয়েছে। গেল নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটা জোট ছিল আরেকটি ছিল কামাল হোসেনের নেতৃত্বে। কিন্তু কামাল হোসেন নেতৃত্ব দিতে পারেনি। নেতৃত্ব দিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। বিএনপি এটা গুরুতর অন্যায় করেছে। এটা ঐক্যফ্রন্ট গঠনের নীতিমালা পরিপন্থি।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেই ঐক্যফ্রন্টের কর্মকান্ড নিয়ে জনগনের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছিলো। ঐক্যফ্রন্ট কোনো অবস্থাতেই জামায়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা ছিলো না। কিন্তু নামে বেনামে জামায়াতের ২০/২৫ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। জাতীয় স্বার্থে ঐক্যফ্রন্ট ধানের শীষ প্রতীক নিয়েছিল। ধানের শীষ দলের নয়, জোটের প্রতীক ছিল। কিন্তু বিএনপি সেই মর্যাদা দেয়নি।
আওয়ামী লীগের সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ঐক্যফ্রন্ট জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারেনি। নোয়াখালির নুসরাত হত্যার প্রতিবাদে কোনো ভূমিকা রাখেনি ঐক্যফ্রন্ট। ধানের দাম না পেয়ে কৃষক দিশেহারা। কৃষকের পাশে দাঁড়াতে পারেনি। সম্প্রতি রিফাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদেও কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। এসব দেখে মনে হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে বাংলাদেশে কখনো কোনো রাজনৈতিক মোর্চা বা জোট ছিল না।
তিনি জানান, নির্বাচন পরবর্তী ৭ মাসে একটি অসমাপ্ত বৈঠক ছাড়া আর কোনো মিটিং হয়নি। ৮ মে এক বর্ধিত সভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ড. কামাল হোসেনসহ অন্যান্য নেতাদের কাছে এসব প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলাম। পরে ৯ মে বর্ধিত সভা ডাকেন ড. কামাল। আমরা ভেবেছিলাম, এই সভায় এসব প্রশ্নের মীমাংসা হবে। কিন্তু এই সভা ডেকে ড. কামাল নিজেই উপস্থিত ছিলেন না। এরপর দীর্ঘ একমাসেও আর কোনো খোঁজ নেই তার। এসব কারণে এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জনগণের আস্থা হারিয়েছে।
সারাবাংলা/এইচএ/জেএএম