আ.লীগ দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে: ফখরুল
৮ জুলাই ২০১৯ ১৭:০৭
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করার মাধ্যমে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করবার জন্য, একের পর এক গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে, বিরোধী রাজনীতিকে ধ্বংস করে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে চিরতরে নির্বাসিত করার আয়োজন সম্পন্ন করেছে তারা।’
সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। এসময় অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের দাবিও জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে জনগণের সব আশা-আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করেছে আওয়ামী লীগ। একটি ফ্যাসিবাদী স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে এসে জনগণের নির্বাচিত পার্লামেন্ট ও সরকার গঠন করতে হবে। সেজন্য অবিলম্বে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছি।’
বিচার বিভাগে দলীয় ব্যক্তিদের নিয়োগের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতার ট্রেনের উপর হামলা সংক্রান্ত মামলায় নিম্ন আদালতে যে রায় দেওয়া হয়েছে তা বিচার ব্যবস্থার একই চিত্র তুলে ধরেছে। এই মামলার রায় ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১৩ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের শাস্তি প্রদানের আদেশ সমগ্র জাতিকে বিস্মিত, হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা যেকোনো সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে। আমরা সব সময়ই সন্ত্রাসের ঘটনায় নিন্দা করেছি, প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং সুষ্ঠু বিচার করেছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ঘটনাগুলোকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চেয়েছে।’
১৯৯৪ সালে ঈশ্বরদীতে সংঘটিত ওই ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের প্রায় সব কর্মকর্তাকে এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে তিন বছর পর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এর প্রায় ২৫ বছর পর আদেশ প্রমাণ করেছে যে, এই আদেশ ন্যায়বিচারের পরিপন্থী ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন- এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কায়সার কামালসহ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এসএইচ/এমও