আমাজনে বন উজাড়ের হার বেড়েছে ৬০ শতাংশ
৮ জুলাই ২০১৯ ১৭:২৬
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বনভূমি আমাজনে বন উজাড়ের হার এক বছরে প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে। খবরে জানিয়েছে সিএনএন। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর গৃহীত নীতিগুলোর কারণেই আমাজন এরকম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে পরিবেশবাদীরা অভিযোগ করেছেন।
আমাজন বনকে পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয়। মোট প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের প্রায় ২০ শতাংশ আমাজন বন থেকে পাওয়া যায়। আমাজন সবচেয়ে বড় বন উজাড় হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। সে সময় প্রায় ২৯.০৫৯ বর্গ কিলোমিটার বন উজাড় হয়েছিল। আর বন উজাড়ের হার সবচেয়ে কম ছিল ২০১২ সালে।
ব্রাজিলের জাতীয় স্পেস গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইএনপিই) সিএনএনকে জানিয়েছে, গত মাসে (জুন) প্রায় ৭৬৯.১ বর্গকিলোমিটার বনভূমি উজাড় হয়েছে। সে হিসেবে প্রতি মিনিটে একটি ফুটবল মাঠের অর্ধেক বনভূমি প্রতিদিনই উজাড় হচ্ছে।
এদিকে আমাজনের মোট আয়তনের দুই তৃতীয়াংশ পড়েছে ব্রাজিলে। ব্রাজিলের কট্টোর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর সরকার বনভূমি সংরক্ষণ নীতি শিথিল করার কারণে এই বনভূমি উজাড়ের হার বেড়েছে বলে পরিবেশবাদীরা অভিযোগ করেছেন।
পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের ব্রাজিল মুখপাত্র মার্সিও এস্ট্রিনি এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন যে,পরিবেশগত সমতাকরনের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের নীতিগুলো সহায়ক নয় এবং এই নীতিগুলোর কারণে ব্রাজিলের অর্থনীতিকে আগামীতে চড়া মূল্য দিতে হবে।
এর আগে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলেছিলেন তিনি ব্রাজিলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন এবং এক্ষেত্রে তিনি আমাজনের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাবেন।
বেসরকারি সংগঠন ক্লাইমেট ওবজারভেটরির প্রতিনিধি কার্লোস রিটি সিএনএনকে জানিয়েছেন,বালসোনারোর এই বনভূমি উজাড়ের নীতিতে কিন্তু ব্রাজিলের কেউ বিস্মিত হননি। কারণ তিনিই ব্রাজিলের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিবেশ বিরোধী এবং আদিবাসী বিরোধী বক্তব্য দিয়েছিলেন। কৃষক এবং খনি ব্যবসায়ীরা শিথিল নীতির সুযোগ নিয়ে বনভূমি উজাড়ের কাজে আত্মনিয়োগ করেছে। তিনি ইউরোপিয় নেতাদেরকে অভিযুক্ত করে বলেছেন যে প্যারিসের পরিবেশ চুক্তির লংঘন করেও বোলসোনারো কোনো জবাবদিহিতার আওতায় আসছেন না,এর দায় ইউরোপিয় নেতাদের।
অপরদিকে বনভূমি উজাড়ের ব্যাপারে যে সকল সংগঠন নজরদারি করছে তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে অসহযোগীতা করা হচ্ছে। পরিবেশ সংক্রান্ত কার্যক্রমে প্রায় ২৩ মিলিয়ন ডলার বাজেট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউরোপিয় নেতাদের মধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাকরোন এবং জার্মানীর চ্যান্সেলর এঞ্জেলো মার্কেল বলেছেন, তারা ব্রাজিলের এই বন উজাড়ের ব্যাপারে জানেন তবে সুনির্দিষ্ট কোন ফোরাম ছাড়া এ ব্যাপারে তারা কথা বলতে পারছেন না।
সারাবাংলা/একেএম