রিকশাচালকদের চায়ের দাওয়াত দিলেন মেয়র খোকন
৯ জুলাই ২০১৯ ১১:২৯
ঢাকা: বৈধ ও লাইসেন্সধারী রিকশাচালকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে নগরীর সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বিনিময় শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ আহ্বান জানান।
মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘নগরীর লক্ষ-কোটি মানুষকে জিম্মি করে, ভোগান্তি দিয়ে দাবি আদায় করা কতটা যৌক্তিক এটা ভেবে দেখতে হবে। এটা প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। সবাই মিলে বসে আলোচনা করে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তাই আমি লাইসেন্সধারী রিকশাচালকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিচ্ছি। তাদের আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারি।’
নগরীতে ১ হাজারের ওপরে রাস্তা রয়েছে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘সেখান থেকে মাত্র তিনটি সড়কে রিকশা বন্ধে আন্দোলনের কিছু নেই। এতে রিকশাচালক ভাইদের সমস্যা হওয়ার কথা না। গতকাল কুড়িল, বিশ্ব রোডসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় তারা আন্দোলন করেছে। তাদের সঙ্গে রিকশার মালিক এবং কিছু অচেনা মুখও দেখা গেছে। তিনটি রাস্তায় রিকশা বন্ধ করা হয়েছিল যানজট কমানোর জন্য। কিন্তু তারা রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করায় পুরো শহর স্থবির হয়ে পড়েছে। আজও বেশ কয়েকটি জায়গায় রাস্তা বন্ধ করার খবর পেয়েছি। এটা খুবই দুঃখজনক।’
রাজধানীর তিন রুটে রিকশা নিষিদ্ধ
মেয়র বলেন, “নগরীতে ২২ লাখের মতো অবৈধ রিকশা রয়ছে। কারও কারও মতে এটা ১০/১২ লাখ। এই অবৈধ চালকদের আমরা কোনভাবেই রাস্তায় চলতে দিতে পারি না। রিকশা চালকরা স্লোগান দিচ্ছে ‘খেতে চাই, বাঁচতে চাই, রিকশা চালাতে চাই।’ আমি বলতে চাই মাত্র তিনটি রাস্তা বন্ধ করায় তাদের খেয়ে-পড়ে-বাঁচতে সমস্যা হবে না।” এসময় তিনি আবার বলেন, ‘নগরীতে হাজারের ওপরে রাস্তা রয়েছে। সেখানে মাত্র তিনটি রাস্তা বন্ধ করলে কোনোভাবেই তাদের সমস্যা হওয়ার কথা না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনটি রাস্তায় রিকশা বন্ধ করার আগে আমি সরেজমিনে গিয়েছি। দেখেছি সেখানে যানজটের জন্য মূলত রিকশা দায়ী। ফলে সবার সঙ্গে আলোচনা করেই রিকশা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিই এবং ৭ তারিখ থেকে রিকশা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপরও আমি বলবো রিকশাচালকরা নগর ভবনে আসুক। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।’
আপনি কি রিকশাচালকদের দাবি মেনে নেবেন নাকি রিকশা বন্ধ করার সিদ্ধান্তে অটল আছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মেয়র খোকন বলেন, ‘যেকোনো সমস্যাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।’
রিকশার চেয়ে প্রাইভেট কার যানজটের জন্য বেশি দায়ী, তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করছেন না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আমি বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। বিশেষ করে যাদের এক পরিবারে একাধিক গাড়ি রয়েছে। এমনও দেখা যায় একটা পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন কিন্তু গাড়ি আছে ৫টি। এসব নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা পর্যায়ক্রমে কাজ করছি। এজন্য প্রথমে রিকশা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, পরে প্রাইভেট কার নিয়েও কাজ করা হবে।’
কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ এবং বিশ্ব ব্যাংকের রিজিওনাল ডিরেক্টর জন রোমি। এছাড়াও সভায় বাস রুট রেশনালাইজেসন বিষয়ে গঠিত কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রিকশাচালকদের বিক্ষোভে স্থবির কুড়িল-রামপুরা-মালিবাগ সড়ক
সারাবাংলা/জিএস/এমও