জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনে বাংলাদেশ সেরা শিক্ষক
১০ জুলাই ২০১৯ ১৯:৪৬
ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনে বাংলাদেশকে সেরা শিক্ষক বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশনের চেয়ারম্যান বান কি মুন। পাশাপাশি তিনি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক একটি বৈশ্বিক অভিযোজন কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন।
বুধবার (১০জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে মন্তব্য করে এই প্রস্তাব দেন। এ সময় মার্শাল আইল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ড. হিলদা হেইন বান কি-মুনের সঙ্গে ছিলেন। জলবায়ুবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে তারা বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন।
বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎ ও বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহ্সানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বান কি মুন বলেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) বিশ্ব নেতাদের মধ্যে অন্যতম যিনি জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাটি নিয়ে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’ এ সময় বান কি মুনের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনার অব্যাহত প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থাবান।’
বান কি-মুন এবং ড. হিলদা উভয়ে অভিযোজনের প্রতিকূল প্রভাবকে মানিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ ও দুর্যোগ মোকাবিলার গৃহীত কৌশলের জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়েও ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ মারা যায়। কিন্তু সরকারের সময়োপযোগী গৃহীত কৌশলের কারণে সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ফণিতে মাত্র কয়েকজন লোক মারা গেছে। মুন আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হবে বাংলাদেশ।
বৈঠককালে বিভিন্ন সময়ে এমনকি জাতিসংঘ মহাসচিব হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার আগেও বাংলাদেশ সফরের সুখস্মৃতি স্মরণ করেন মুন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বায়ুদূষণের জন্য দায়ী ‘কার্বন’ বাংলাদেশ খুব সামান্যই নিরসন করে থাকে। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭০ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে স্বাধীনতার পর বহুমুখী সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর পথ দেখিয়েছেন।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে বঙ্গবন্ধু কক্সবাজারে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলেছিলেন এবং যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় তখন ৪৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত করেছিলেন।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এছাড়া জাতির পিতা জনগণের পাশাপাশি গৃহপালিত পশুদের জীবন রক্ষায় ‘মুজিব কিল্লা’ গঠন করেছিলেন। ’
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে তাঁর সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, তারা সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে এবং জনগণের জন্য অভিযোজন কার্যক্রম গ্রহণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম