Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুন্দরবনের স্ট্র্যাটেজিক সমীক্ষা করবে সরকার: জ্বালানি উপদেষ্টা


১০ জুলাই ২০১৯ ২২:০৫

ঢাকা: বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে নির্মিতব্য রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ চলবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এর পরেও যদি কোনো সুপারিশ পাওয়া যায় তবে সেটির বাস্তবায়ন ও সুন্দরবনের স্ট্র্যাটেজিক সমীক্ষা করবে সরকার। আগামী আড়াই বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। সুন্দরবন নিয়ে ইউনেস্কোর দাবির প্রেক্ষিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে।’

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১০ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সুন্দরবন বিষয়ে ইউনেস্কোর প্রতিবেদন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো সব সময় মনে করে অন্যদেশগুলো তাদের অধীনস্থ হয়ে থাকবে। এ কারণেই অনেকে বিরোধিতা করেছেন। ইউনেস্কো যে সুন্দরবন নিয়ে কমেন্ট করেছে সেটি ছিল এক ধরনের স্টুপিড কমেন্ট। আমার মনে হয়, আমাদের উপস্থাপিত প্রতিবেদন দেখার পর তারা কিছুটা লজ্জাও পেয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানানো হবে। এছাড়া একটি অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছে সরকার।‘

তিনি জানান, প্যারিসে অনুষ্ঠিত সবশেষ মিটিংয়ে বাংলাদেশের ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এরমধ্যে পরিবেশ, পানি, বিদ্যুৎ ও পরিবহনসহ সংশ্লিষ্ট সব খাতের বিশেষজ্ঞরা ছিলেন। উন্নত দেশ সব সময় ভাবে আমাদের কোনো জ্ঞান নেই। স্টাফিং সাপোর্ট যারা দেয় তাদের কাছে বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য ছিল না। আগে ইউনেস্কো রামপালের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। এবার তারা পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। আমরা তাদের মানচিত্রে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবস্থান দেখিয়েছি, পায়রা কোথায় আর সুন্দরবন কোথায়। তাদের বলেছি, আর একটু দূরে গেলে তো ঢাকাই চলে যেতে পারতে।

২১টি দেশের মধ্যে ১৬টি দেশ বাংলাদেশকে সমথর্ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ সময় একটি কাজের খসড়া করা হয়। তাতে প্রথমে আমরা সায় দিইনি। কিন্তু পরে চূড়ান্তটায় সায় দি। সেখানে আমাদের সাতটি কাজের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘সুন্দরবনের আয়তন বেড়েছে। ১৯৯৬ সালে ছিল চার লাখ ৩৬ হাজার ৬৩৬ হেক্টর। ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী তা বেড়ে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭৪৩ হেক্টর। এ সময় ম্যানগ্রোভ বনের পরিমান ২৩ দশমিক দুই থেকে বেড়ে হয়েছে ২৬ ভাগ।’

বিজ্ঞাপন

পরিবেশ দূষণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর থেকে যে কার্বন নিঃসরণ হয় তা নিয়ন্ত্রণের আধুনিক কোনো প্রযুক্তি এখনো হয়নি। আমরাও কার্বন নিঃসরণ করি। গাছ তা টেনে নেয়। অন্যদিকে কেন্দ্র থেকে নিঃসরিত সালফার ডাই-অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড নিয়ন্ত্রণে এফজিডি (ফ্লু গ্যাস ডি সালফারাইজেশন) বসানো হচ্ছে। এতে ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ ফ্লু গ্যাস নিঃসরণ কমানো সম্ভব। এছাড়া থাকে ছাই। ছাই ধরতে এস ক্যাচার ব্যবহার করা হবে। ফলে ছাই বাতাসে বা নদীর পানিতে মিশবে না। আর বাকি থাকে পানি। পানি পুনঃব্যবহারের জন্য পরিশোধন করা হবে। এই পানি এতটাই নিরাপদ যে এটি পানের যোগ্য।’

পানিসম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘আমরা সুন্দরবন সুরক্ষায় একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এখন সেটি অনুমোদনের জন্য প্ল্যানিং কমিশনে আছে।’

পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক ডিজি সুলতান জানান, সুন্দরবন তথা মংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৫৪টি শিল্প কল কারখানা আছে। এর মধ্যে ২৪টি লাল চিহ্নিত। এ লালের অর্থ খুব ক্ষতিকর নয়। ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা আছে। এসব কারখানা আজকের নয়। ৬০-৭০ বছরের পুরানো। ফলে কারখানাগুলো পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজিত হয়ে গেছে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় আর বড় কোনো শিল্পের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি রামপালের দ্বিতীয় ইউনিটও করা হচ্ছে না।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সারাবাংলা/এইচএ/এমআই

সমীক্ষা সুন্দরবন স্ট্র্যাটেজি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর