১৪ জুলাই শুরু হচ্ছে জেলা প্রশাসক সম্মেলন
১১ জুলাই ২০১৯ ১০:৪১
ঢাকা: আগামী ১৪ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে জেলা প্রশাসক সম্মেলন। টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের ছয় মাসের মাথায় মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এই সম্মেলন শুরু হচ্ছে।
রাজধানীতে পাঁচ দিনব্যাপী এ সম্মেলন চলবে ১৮ জুলাই পর্ডন্ত। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরইমধ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরবেন সারাদেশের জেলা প্রশাসকরা। এবারই প্রথম জেলা প্রশাসকরা জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, ১৪ জুলাই সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বেলা ১১টায় করবী হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের উন্মুক্ত আলোচনা হবে। দুপুর সোয়া ১২টায় হবে ফটোসেশন।
এসব আনুষ্ঠানিকতার পরে দুপুর আড়াইটায় সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম কার্য-অধিবেশন শুরু হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে কার্য-অধিবেশনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, সমাজকল্যাণ ও যুবক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত আলোচনা হবে। প্রতিটি অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। এই অধিবেশন চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
এরপর শুরু হবে দ্বিতীয় অধিবেশন, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এই অধিবেশনে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত আলোচনা হবে।
পরদিন ১৫ জুলাই সচিবালয়ের একইস্থানে দ্বিতীয় দিনের প্রথম কার্য-অধিবেশন শুরু হবে। সকাল পৌনে ৯টায় শুরু হয়ে এ অধিবেশন চলবে এক ঘণ্টা। এতে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, অর্থ বিভাগ, পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান বিভাগ নিয়ে আলোচনা হবে।
এরপর দ্বিতীয় অধিবেশনে বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ, তৃতীয় অধিবেশনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ে, চতুর্থ অধিবেশনে সংস্কৃতি বিষয়ক ও তথ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে আলোচনা হবে।
ওইদিন পঞ্চম অধিবেশন হবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। এতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও এর আওতাধীন সংস্থাগুলো নিয়ে এতে আলোচনা হবে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বঙ্গভবনে জেলা প্রশাসকরা রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এসময় রাষ্ট্রপতি জেলা প্রশাসকদের নানা দিকনির্দেশনা দিয়ে বক্তব্য দেবেন।
এরপর ১৬ জুলাই সম্মেলনের তৃতীয় দিনে পাঁচটি অধিবেশন হবে। এদিন ১২ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত আলোচনা হবে। প্রথম অধিবেশন শুরু হবে পৌনে ৯টায়। এতে আলোচনা হবে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় নিয়ে। দ্বিতীয় অধিবেশনে আলোচনা হবে পানিসম্পদ ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় নিয়ে। তৃতীয় অধিবেশনে বাণিজ্য, শিল্প ও পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় নিয়ে, চতুর্থ অধিবেশনে প্রবাসী কল্যাণ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত আলোচনা হবে। নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতির পর দুপুর সোয়া ২টায় পঞ্চম অধিবেশন শুরু হবে। এতে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং আইন ও বিচার বিভাগ সংক্রান্ত আলোচনা হবে। এরপর বিকেল ৪টায় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের সাক্ষাতের জন্য এক ঘণ্টার সময় নির্ধারিত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক সম্মেলনের চতুর্থ দিন ১৭ জুলাই ৮টি কার্য অধিবেশন হবে। এসব অধিবেশনে ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নিয়ে আলোচনা হবে। প্রথম অধিবেশন যথারীতি পৌনে ৯টায় শুরু হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বিভাগ, দ্বিতীয় অধিবেশনে স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিষয়ে, তৃতীয় অধিবেশনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সেতু বিভাগ ও রেলপথ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হবে। চতুর্থ অধিবেশনে স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত আলোচনা হবে, পঞ্চম অধিবেশনে ভূমি মন্ত্রণালয় নিয়ে, ষষ্ঠ অধিবেশনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় নিয়ে আলোচনা হবে। বিকেল ৪টা থেকে সপ্তম অধিবেশনে কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত এবং সবশেষ অষ্টম অধিবেশনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় নিয়ে আলোচনা হবে।
জানা গেছে, এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে সারাদেশে নারী শিশুদের উপর নির্যাতন খুন, মাদক ও স্থানীয় উন্নয়নের আলোচনার উপর জোর দেওয়া হবে বেশি।
সারাবাংলা/এইচএ/এসএমএন