রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত ভুল, প্রাইভেটকার বাড়ার আশঙ্কা
১১ জুলাই ২০১৯ ১৮:২১
ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় দিনে ৪০ শতাংশ মানুষ রিকশায় চলাচল করেন। মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার উদ্দেশেই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় এই যানটি। এ পরিপ্রেক্ষিতে রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত ভুল বলে মনে করেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। তাদের আশঙ্কা, এতে প্রাইভেটকার বেড়ে যাওয়াসহ দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ‘রিকশা ও যান্ত্রিক বাহনের চলাচল সম্পর্কে নগর পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে করণীয়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব উপস্থাপন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স।
ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মাহমুদ ঢাকার সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনা আর এসটিপি তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘সড়ক রিকশা মুক্ত করে যানজট নিরসনের উদাহরণ নেই। রিকশা মুক্ত সড়ক আনঅফিসিয়াল কার পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে সড়কের কার্যকর প্রশস্ততা এবং এর উপযোগিতা অর্জিত হচ্ছে না।’
সড়কের প্রায় ৫৫ শতাংশ জুড়ে প্রাইভেটকার
সংবাদ সম্মেলনে নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল বলেন, ‘ঢাকা মহানগরের সড়কের প্রায় ৫৫ শতাংশ জুড়ে চলাচল করে ব্যক্তিগত গাড়ি। আর এগুলো বহন করে মাত্র ১২ শতাংশ যাত্রী। একটি প্রাইভেটকার রিকশার চেয়ে আড়াই শতাংশ বেশি জায়গা দখল করে। সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির অবৈধ পার্কিং যানজটের অন্যতম কারণ। ‘
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে যোগাযোগব্যবস্থা টেকসই করার জন্য রিকশা বন্ধের টার্গেট করা হয়েছে। বিপরীতে ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য রাস্তায় বিধিনিষেধ আরোপ এখনও অনুপস্থিত।’
সংবাদ সম্মেলনে গাবতলী আজিমপুর ও কুড়িল সায়েদাবাদ সড়কে আবাসিক এলাকা এবং জনসংখ্যার তথ্য তুলে ধরে রিকশার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
বলা হয়, কুড়িল-সায়দাবাদ সড়কের পাশের ৫৭ ভাগ আবাসিক এলাকা যেখানে ২১ লাখ মানুষ বসবাস করেন। এছাড়া গাবতলী-আজিমপুর রোডের আবাসিক এলাকা ৩৯ ভাগ, যেখানে বসতি রয়েছে ১৫ লাখ মানুষের।
ইনস্টিটিউট সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলনে করণীয় তুলে ধরে বলেন, রাস্তার সক্ষমতা বিবেচনা করে রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ এবং ব্যবহার নির্দিষ্ট করতে হবে। নগর পরিবহন ব্যবস্থায় রিকশার অবদানের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনা মেনে পর্যাপ্ত বাস নামিয়ে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কমিউনিটিভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যাতে মানুষ রিকশা কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ির বিকল্প খুঁজে পায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন ইনস্টিটিউটের সভাপতি ড আবুল কালাম, সহ-সভাপতি ড. আকতার মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডক্টর মুসলেহ উদ্দিন, ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ রহমান এবং সোহেল রানা।
সারাবাংলা/এসএ/পিটিএম