Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

টানা বর্ষণে ফের ডুবল চট্টগ্রাম, পাহাড়ধস


১৩ জুলাই ২০১৯ ১২:০৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: রাতভর ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা আবারও পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা বৃষ্টির কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে এই জলাবদ্ধতায় নাকাল হতে হচ্ছে নগরবাসীকে। এছাড়া পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়া দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছে আরও এক শিশু।

গত ৮ জুলাই ভারী বর্ষণে নগরীর দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা পানিতে ডুবে যায়। এরপর থেকে বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছিল। কিন্তু শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত থেকে একটানা মুষলধারের বৃষ্টিতে শনিবার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে আবারও জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে চট্টগ্রাম।

বিজ্ঞাপন

টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। মূল সড়কগুলোতে যানজট তৈরি হয়েছে। এছাড়া অলিগলিতেও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাসা-দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস, কাঁচাবাজারেও। সার্বিকভাবে বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।

আরও পড়ুন: নদীর ঢেউ সড়কে

নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ বিশ্বজিৎ চৌধুরী সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ৫১দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত আরও দুদিন থাকতে পারে।

এদিকে শনিবার সকাল থেকে নগরীর ওয়াসা, মেহেদিবাগ, প্রবর্তক, অক্সিজেন মোড়, মুরাদপুর, ২ নম্বর গেইট, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, পাঁচলাইশ, শুলকবহর, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, বাকলিয়া, হালিশহরসহ চট্টগ্রাম নগরীর বড় অংশজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও হাঁটু পানি, আবার কোথাও কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে নগরীর মূল সড়ক ও অলিগলি।

বিজ্ঞাপন

মুরাদপুর থেকে কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর সমান পানি মাড়িয়ে নগরীর আগ্রাবাদে পৌঁছান চাকরিজীবী নাসির উদ্দিন হায়দার। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাসা থেকে বের হয়েই পানির মধ্যে পড়ি। পানির মধ্যে কোথাও রিকশায় করে, কোথাও হেঁটে যেতে হয়েছে।’

বোয়ালখালী উপজেলা থেকে নগরীর আসবার দিঘির পাড়ে আসা সত্যানন্দ আচার্য্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘বহদ্দারহাট যেন একটা খাল। কাপ্তাই রাস্তার মাথা পার হবার পরই পানিতে আটকে যায়। অনেক পথ পানিতে হেঁটে পার হতে হয়েছে।’

চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে থাকার তথ্য দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি নিয়ে ফ্লাইওভার অতিক্রম করতে গিয়ে অনেকে দুর্ভোগে পড়েছেন।

নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আরেফিন নগরে সকালে পাহাড়ের মাটি ধসে দু’জন চাপা পড়েছিল। তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।’

এদিকে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর কুসুমবাগ আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়ধসে এক শিশু আহত হয়েছে।ফায়ার সার্ভিসেরআগ্রাবাদ স্টেশনের একটি দল ঘটনাস্থল গিয়ে তিন বছর বয়সী শিশু নুসরাত শারমিনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

এছাড়া সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরায় পিইচপি স্টিল মিলের পেছনে পাহাড়ধস ও পাহাড়ি ঢলের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী সারাবাংলাকে বলেন, ‘কুসুমবাকে এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করেছি। সে আহত হয়েছে। মাটি সরানোর কাজ চলছে। সেখানে আর কেউ মাটিচাপা অবস্থায় আছে কি না সেটা আমরা দেখছি। সীতাকুণ্ডের কুমিরায়ও পাহাড়ধস এবং পাহাড়ি ঢল নেমে এসেছে। তবে সেখানে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নেই।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতা বর্ষণ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর