স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে প্রশ্নফাঁসের বিষয় খতিয়ে দেখতে ১১ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সচিব আলমগীর হোসেনকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
চলমান এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে রোববার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন নুরুল ইসলাম নাহিদ।
১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথমপত্র ও দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর এ কমিটি গঠনের ঘোষণা এলো।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন গণযোগাযোগ মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেসব মূল্যায়ন করতে আমরা উচ্চপর্যায়ের ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মন্ত্রী জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, পুলিশ, তিন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এ কমিটি গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, এ কমিটি প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পেলে সারাদেশের পরীক্ষা বাতিল করতে পারবে।
এর আগে বিকেল তিনটায় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত করতে জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলা কমিটির এক জরুরি সভা সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কেবিনেট ডিভিশন, বিটিআরসি এবং পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০১৫ সালে ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, ২০১৭ সালে এমসিকিউ পরীক্ষায় আরো ১০ নম্বর কমিয়ে আনা হবে। এ বিষয়ে আমরা সেমিনার করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন,‘ পরীক্ষার হলে পরীক্ষা-শিক্ষার্থীসহ কেউই কোনো ধরনের ডিভাইস, মোবাইল ফোন আনতে পারবে না। যদি কারও কাছে এ সব জিনিস পাওয়া যায় তবে ঘটনাস্থলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।’ এছাড়াও ৩০ মিনিট আগে শুধু কেন্দ্রে প্রবেশ নয় পরীক্ষার্থীদের নিজ নিজ আসনে বসার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে ভিজিল্যান্স টিম আরো জোরদার করা হবে। পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নের মোড়ক খোলার সময় স্থানীয় প্রসাশনের একজন কর্মকর্তা, একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং কেন্দ্র সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে খোলা হবে।
তিনি বলেন, যারা প্রশ্ন ফাঁস বা ফাঁসের গুজব ছড়াচ্ছে, কার্যক্রম দেখে একথা প্রতীয়মান হয়, তাদের লক্ষ্য সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে হেয় প্রতিপন্ন করা। এজন্যই পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করা হচ্ছে। এর সাথে জড়িত প্রত্যেকে ধরা পড়বে। তাদেরকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।
প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে এখনই বলা যাবে না। তদন্ত কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
সারাবাংলা/জিএস/একে