চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৃষ্টিবিলাস
১৩ জুলাই ২০১৯ ১৮:১৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: গ্রীষ্মের অগ্নিক্ষরা তাপদাহে প্রকৃতি যখন দগ্ধ, নিরুদ্ধ-নিশ্বাস অস্থির হাহাকার হয়ে ওঠে। তৃষ্ণার্থ চাতক বৃষ্টির জন্য করুণ আকুতি জানায়। মানুষের মনও ব্যাকুল বিনয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করে। আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে তুই। তখন তৃষ্ণার্থ প্রকৃতিকে অমৃতসুধায় ভরিয়ে দিতে একরাশ সজীবতা আর কদমফুলের সুভাষ নিয়ে আবির্ভাব ঘটে ‘নবযৌবনা’ বর্ষার।
বৃষ্টির দিনে কোনো কাজে মন বসে না। কোথায় যেন হারিয়ে যেতে চায় এই বর্ষায়। কতই রোমান্টিকতার সঙ্গী এই বৃষ্টি। সেই রোমান্টিকতার জোয়ারে ভাসতে ভাসতেই কবিরা তাদের কবিতায় প্রকাশ করেন প্রেমের ব্যাকুলতা। বর্ষা বাংলার কবিদের মন ও মননকে আন্দোলিত করে তোলে। যুগে যুগে সব সময়ে বর্ষা তার অপরূপ রূপের ছুরি নিয়ে হানা দিয়েছে প্রেমিক প্রেমিকাদের মনে এক পশলা বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে, বর্ষার নবযৌবনে। সেটা যদি হয় দেশের পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটা চত্বর জিরো পয়েন্ট, শহীদ মিনার, জয় বাংলা ভাস্কর্য, মুক্তমঞ্চ, লেডিস জুপড়ি, কলা জুপড়ি, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, সবখানে টুপটাপ বৃষ্টি সুনসান নীরবতার মাঝে বৈচিত্রতার ভার মেলে। ক্যাম্পাসের বৃষ্টির দিনগুলো সবারই প্রিয়। কেউ বৃষ্টিতে ভিজে আড্ডা-গানে, কেউবা প্রিয়জনের সঙ্গে আলাপচারিতায়, কারেও কাছে বৃষ্টির দিনগুলো মানেই প্রিয়জনের সঙ্গে রিকশা ভ্রমণ, একই ছাতার নিচে আধভেজা হয়ে একান্ত সময় কাটানো। আর কেউবা খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভিজে তাদের ভালবাসাকে অভ্যর্থনা জানায়।
বর্ষায় ক্যাম্পাসের বৃষ্টিবিলাস এবং বৃষ্টির সময় ক্যাম্পাসের অনুভূতি বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী তণ্বী পাল বলেন, ‘বর্ষার আগমনে আমাদের এই সবুজ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য শতগুণ বেড়ে যায়। ক্যাম্পাসের প্রতিটি স্থান আরও সবুজ হয়ে ওঠে। সবুজ ক্যাম্পাসে বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা উপভোগ করার মতো। বৃষ্টিতে ভেজার মধ্যেও একটা প্রাকৃতিক আবহ ও ভালবাসা বিদ্যমান। তাই সুযোগ পেলেই বৃষ্টিতে ভিজে বৃষ্টিবিলাস উপভোগ করি।’
অন্যদিকে দর্শন বিভাগের ১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মংশিং মারমা বলেন, ‘বর্ষায় ফিরে যাই আমার ফেলে আসা শৈশবের দিনগুলোতে। যদিও ক্যাম্পাসে বৃষ্টির দিনে সেই শৈশবের কথা একটু হলেও মনে পড়ে।’
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার শামান্তা বলেন, ‘আহা… বৃষ্টির দিনে ক্যাম্পাসে থাকতে জীবনটাকে সতেজ লাগে। চবি যেকোন মৌসুমেই সুন্দর। আর বর্ষাকালে তো আরও সুন্দর। মন চাইলে বৃষ্টিতে ভিজি। বর্ষার মধ্যে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরতেও কোনো সমস্যা হয় না। আমার মনে হয় যারা ক্যাম্পাসে থাকে না তারা ক্যাম্পাসের এই দিনগুলো কোনোদিনও বুঝবে না।’
সারাবাংলা/সিসি/এমআই