Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এরশাদ এপিসোড: ১৯৩০-২০১৯


১৪ জুলাই ২০১৯ ০৯:২৮

ঢাকা: ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এরশাদ। পরে তার পরিবার রংপুরে চলে আসে। বাবা মকবুল হোসেন ও মা মজিদা খাতুনের চার ছেলে ও পাঁচ মেয়ের মধ্যে এরশাদ ছিলেন দ্বিতীয়। অবশ্য ভাইদের মধ্যে সবার বড় ছিলেন তিনি। বাবা-মা আদর করে পেয়ারা নামে ডাকতেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে।

আরও পড়ুন: এরশাদ আর নেই

এরশাদের স্কুল এবং কলেজ জীবন কেটেছে রংপুর শহরে। ১৯৪৬ সালে দিনহাটা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন করেন। এরপরে ভর্তি হন রংপুর কারমাইকেল কলেজে। সেখানে পড়ার সময় মনোযোগ দেন লেখালেখির দিকে। ছিলেন কলেজ ছাত্রসংসদের সাহিত্য সম্পাদক।

বাবা মকবুল হোসেন ছিলেন নামকরা আইনজীবী। এরশাদেরও ইচ্ছা ছিল বাবার মতো বড় আইনজীবী হওয়ার। ১৯৫০ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকায় আসেন তিনি। ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। মাত্র দুইশ টাকা নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন এরশাদ। বাবার ওপর চাপ কমাতে নিজেই শুরু করেন টিউশনি। বাবার মতো বড় আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ ক্লাসে পড়ার পাশাপাশি ভর্তি হন ল কলেজে।

১৯৪৮ সালে কারমাইকেল কলেজের শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ হবার গৌরব অর্জন করেন এরশাদ। বিশ্ববিদ্যালয়েরও ক্রীড়া দলের তিনি ছিলেন কৃতি খেলোয়াড়। ১৯৫৩ থেকে ৫৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা অঞ্চলের ফুটবল দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। ১৯৫২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। এরপর ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধেও অংশ নেন। ১৯৬৯ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদন্নতি পান। সেনা কর্মকর্তা হিসেবে এরশাদ প্রথম নিয়োগ পান ২ নম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের কোয়েটে স্টাফ কলেজ থেকে স্টাফ কোর্স সমাপ্ত করেন। তিনি ১৯৬৭ সালে শিয়ালকোটে ৫৪ ব্রিগেডের ডেপুটি অ্যাসিসটেন্ট অ্যাডজুট্যান্ট ও কোয়াটার মাস্টার জেনারেল ব্রিগেড মেজর ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারেননি এরশাদ। তিনি ওই সময় পাকিস্তানে বন্দি ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ১২ ডিসেম্বর কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। ১৯৭৫ সালের ১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সরকার উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের দিল্লির ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে পাঠায়। সেখানেই প্রশিক্ষণকালে তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে উন্নীত হন। ওই বছর আগস্ট মাসে আবার পদোন্নতি পেয়ে মেজর জেনারেল হন। ১৯৭৮ সালের ১ ডিসেম্বর সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭৯ সালের ৭ নভেম্বর তাকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত করা হয়। ১৯৮০ সালের ৩০ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর সেনা বিদ্রোহ দমন করেন এরশাদ।

১৯৮২ সালে ২৪ মার্চ দেশে সামরিক আইন জারি করে শাসনকাজ শুরু করেন এরশাদ। এরপর ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি গঠন করেন জাতীয় পার্টি। তিনি একটানা ৯ বছর শাসন করেন। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে গণ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। ১৯৯১ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ছয় বছর কারান্তরীণ থাকার পর ১৯৯৭ সালের জানুয়ারি মাসে জামিনে মুক্ত হন। জেলে থাকা অবস্থায় দুটি সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়ে দুবারই পাঁচটি করে আসনে জয় পান। তবে আদালতের রায়ে দণ্ডিত থাকায় বাতিল হয় তার সংসদ সদস্য পদ।

আরও পড়ুন: শোকবার্তা: সংসদে এরশাদের গঠনমূলক ভূমিকা স্মরণ প্রধানমন্ত্রীর

২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সামনে আসে জাতীয় পার্টি। তবে এরশাদ হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত। তার স্ত্রী রওশন এরশাদ বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে সংসদে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সংসদে বিরোধী দলে জায়গা পায় জাতীয় পার্টি। এরশাদ হন বিরোধী দলের নেতা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম/এমআই

এরশাদ এরশাদ আর নেই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর