শিশু ধর্ষণের ঘটনায় আপসের বিষয়ে জানতে চান হাইকোর্ট
১৪ জুলাই ২০১৯ ১৫:৪৬
ঢাকা: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চতুর্থ শ্রেণীর এক প্রতিবন্ধী শিশুর (১১) ধর্ষণে ঘটনা সালিশের মাধ্যমে ১৪ হাজার টাকায় আপস রফার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে সালিশকারীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনে ও চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছে কি না সে বিষয়টিও জানাতে বলা হয়েছে।
দিনাজপুরের ডিসি-এসপি, ফুলবাড়ীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে আগামী রোববারের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে।
‘শিশু ধর্ষণে জরিমানা ১৪ হাজার টাকা’শিরোনামে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (১৪ জুলাই) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চতুর্থ শ্রেণীর এক প্রতিবন্ধী শিশুর (১১) ধর্ষণের মূল্য ১৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সালিশের মাধ্যমে ঘটনাটি আপসরফার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩ জুলাই উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর আবাসন এলাকায়। সালিশে অভিযুক্তকে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও ওই শিশুর বাবাকে দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার টাকা। বাকি৭ হাজার টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়েছে উপস্থিত কথিত দুই সাংবাদিকসহ সালিশকারীদের মধ্যে।
শিশুটির পিতা ভবিষ্যতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যেন কোনপ্রকার আইনের আশ্রয় নিতে না পারেন। এছাড়া বিষয়টি যেন কারও কাছে ফাঁস না করেন সেজন্য ৩০০ টাকা মূল্যের সাদা স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নিয়ে রাখারও ব্যবস্থা করা হয়েছে ওই সালিশে।
জানা যায়, ঘটনার দিন আবাসনের বাসিন্দা ওই রিকশাচালকের চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া প্রতিবন্ধী মেয়ে দোকানে জুস নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে একই আবাসনের বাসিন্দা মেহেদুল ইসলাম (৩৫)। ঘটনাটি জানাজানি হলে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শুরু হয় শিশুর পিতা-মাতার ওপর বিভিন্ন ধরনের চাপসহ হুমকি।
এক পর্যায়ে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ধর্ষণ ঘটনাটি মীমাংসা করতে বাধ্য করা হয়। শিশুর পিতা জানান, ঘটনার পর থেকে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কিন্তু এলাকার শফিকুল ইসলাম, ইউপি মেম্বার সাইফুল ইসলাম বাবলু, গ্রাম পুলিশ আব্বাস উদ্দিন ও আবাসনের বাসিন্দা মো. সুজনের চাপে পড়ে ওইদিন বেলা ২টায় আবাসনে সালিশে উপস্থিত থাকেন। সালিশের সময় দুইজন সাংবাদিকও উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ এজেডকে/জেডএফ