পদ্মায় শেষ হলো পাইল ড্রাইভিং
১৪ জুলাই ২০১৯ ২০:৩৩
ঢাকা: যে ধুম ধুম শব্দের উৎসবে শুরু হয়েছিল পদ্মাসেতুর কাজ, সেই শব্দ আর শোনা যাবে না। পদ্মার বুক থেকে ভেসে আসবে না পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হাতুড়ির আঘাতের শব্দ। রোববার (১৪ জুলাই) সেই শব্দের সমাপ্তি ঘটলো পদ্মায় শেষ পাইল ড্রাইভিংয়ের মধ্যদিয়ে।
এতদিন একেকটি ধুম শব্দে ১ মিলি করে পদ্মার গভীরে যেত পাইল। এভাবে পাইলের এক মিটার যেতে শুনতে হতো এক হাজার ধুম শব্দ। আর এই পাইলগুলো নদীর তলদেশে নিয়ে যেত সাড়ে তিনহাজার কিলোজুল শক্তির বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাতুড়ি (হ্যামার)।
রোববার সকাল সাড়ে ১১ টার পর শুরু হয় পদ্মায় শেষ পাইল ড্রাইভিংয়ের কাজ। এর মধ্যদিয়ে নদীর তলদেশ ছোঁয় সেতুর ৪২ পিলার। ৪২টি পিলার নদীতে গেঁথে দিতে প্রয়োজন হয়েছে ৫টি হ্যামারের।
পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শকিকুল ইসলাম জানান, নদী গর্ভে পিলার পৌঁছানো ছিল সেতুর সবেচেয়ে জঠিল কাজ। অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এখন ৪২টি পিলারের সবগুলো পাইল নদীর তলদেশে সফলভাবে গেথেঁ দেওয়া গেল।
আরও পড়ুন: পদ্মার তলদেশে যাওয়ার অপেক্ষায় সেতুর শেষ পাইল
প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মুন্সিগঞ্জের মাওয়া থেকে শরিয়তপুরের জাজিরা পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার নদী জুড়ে শুধু পিলার আর পিলার। আর কিছু পিলারে বসেছে স্প্যান। ২৪টি স্প্যানের মধ্যে ১৪টি স্প্যান পিলারের ওপর বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে সেতুকাঠামো দেখা যাচ্ছে প্রায় সোয়া ২ কিলোমিটার। এছাড়া আরও ১০টি স্প্যান প্রস্তুত রয়েছে মাওয়া পাড়ে। এ মাসের শেষের দিকে পিলারে আরও একটি স্প্যান বসবে বলে জানা গেছে।
৮ হাজার ২০০ টন লোড ধারণ ক্ষমতার ৬টি পাইল দিয়ে গড়ে উঠে একটি পিলার। কোনো কোনো পিলারে ৭টি করে পাইল রাখা হয়েছে। একেকটি পিলার নদীর ১১০ থেকে ১২০ মিটার গভীরে নিয়ে যাওয়া হয়। সর্বোচ্চ গভীরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেতুর শরিয়তপুরের অংশের ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারকে।
৪২টি পিলার গড়তে প্রায় সাড়ে ৩ বছর লাগলো সেতু নিমাণকারী চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানির। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম পদ্মার পাইল ড্রাইভিং শুরু হয়। তার আগে ২০১৫ সালের মার্চে হয় টেস্ট পাইল ড্রাইভিং।
সারাবাংলা/এসএ/পিটিএম