এরশাদকে রংপুরেই সমাহিত করার দাবি, প্রয়োজনে আন্দোলন
১৫ জুলাই ২০১৯ ১৫:২৪
রংপুর: রাজধানীর সামরিক কবরস্থানে সমাহিত করার কথা সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। তবে ঢাকায় নয় তার রংপুরের বাসভবন পল্লীনিবাস প্রাঙ্গণে তাকে সমাহিত করার দাবি উঠেছে।
এমনকি রংপুরে এরশাদের মরদেহ নেওয়ার পর তা আর ঢাকায় ফেরত পাঠানো হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সেখানকার স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এজন্য বৃহত্তর আন্দোলনে যেতেও প্রস্তুত তারা। এই মুহূর্তে তার কবর নিয়ে রংপুরবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২ টায় রংপুরে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে সিটি মেয়র ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফিজুর রহমান মোস্তফা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা রংপুরবাসী চাই তার মরদেহ যেন পল্লীনিবাসেই দাফন করা হয়। তাকে এখানে সমাধিস্থ করা না হলে রংপুরবাসী তা মেনে নেবে না। আমরা জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বৈঠক করেছি, সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা এরশাদকে রংপুর থেকে নিয়ে যেতে দেবো না। প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
কথা হয় রংপুরের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। স্থানীয় শাহরিয়ার রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এরশাদ রংপুর বাসীর জন্য গর্ব। তিনি মারা গেছেন, তাকে রংপুরে দাফন করা হবে এটাই স্বাভাবিক। পল্লীনিবাসের সামনে তার সমাধিস্থল হবে, সেখানে একটি মিউজিয়াম হবে, রংপুরবাসী দেখতে আসবে, সারাদেশের মানুষ রংপুর আসলে সেখানেও দেখতে যাবে। এমনটাই হওয়া উচিত। কিন্তু ঢাকায় কবর দেওয়া হলে কেউ সেখানে যেতে পারবে না।’
পল্লীনিবাসের পাশেই বাস করেন মেহেদী জামান। তিনিও এরশাদকে রংপুরে সমাধিস্থ করার পক্ষে। জানতে চাইলে আঞ্চলিক ভাষায় তিনি বলেন, ‘হামার ছোয়াক হামরা রংপুরোতেই মাটি দিবার চাই। বঙ্গবন্ধুকে যদি গোপালগঞ্জে মাটি দিতে পারে তাইলে হামরা কেন পাম না? (আমাদের সন্তানকে আমরা রংপুরেই কবর দিতে চাই। বঙ্গবন্ধুকে যদি গোপালগঞ্জে সমাধিস্থ করা যায় তাহলে আমরা কেন পারবো না?)’
শেষবারের মতো কাকরাইল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এরশাদ
প্রসঙ্গত, রোববার সকালে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এরশাদ। সেদিন বাদ জোহর ক্যান্টনমেন্ট জামে মসজিদে এরশাদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার মরদেহ সর্বসাধারণ ও নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কাকরাইলে জাতীয় পার্টির অফিসে নেওয়া হয়। তারপর সিএমএইচের হিমঘরে তাকে রাখা হয়। আজ সকাল সোয়া ১০টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় তার দ্বিতীয় জানাজা হয়।
জাতীয় পার্টির নেতা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার এরশাদের মরদেহ রংপুর নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেটি হলে সেখানে রংপুর জেলা স্কুল মাঠে অথবা ঈদগাহ মাঠে তার চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেলে মরদেহ ঢাকায় এনে সামরিক কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
সারাবাংলা/ইউজে/এসএমএন