ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় সড়ক উন্নয়নের উদ্যোগ
১৫ জুলাই ২০১৯ ১৭:৫৭
ঢাকা: গ্রামীণ জনপদে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোর রাস্তা উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য ‘ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এতে খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শক্তিশালী পল্লীসড়ক নেটওর্য়াক তৈরি হবে এবং সড়কের ধারণক্ষমতা ও নিরাপত্তা বাড়ানোর মাধ্যমে কৃষি-অকৃষি পণ্যের বিপণন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, প্রকল্পটির প্রস্তাব পাওয়ার পর এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ডিপিপি উপস্থাপনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম গুলো হচ্ছে- ১ হাজার এক দশমিক ৫১ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ৫ হাজার ৮৫৭ মিটার ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, ৩০ কিলোমিটার ড্রেন, ২৪০টি ইন্টারসেকশন, ১২ হাজার স্লোপ প্রোটেকশন, ৩ হাজার ট্রাফিক সাইন এবং ১২ হাজার গাইড পোস্ট তৈরি।
সূত্র জানায়, ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলার ৮৮টি উপজেলার মধ্যে ৬৭টি উপজেলাকে প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে- ঢাকার নবাবগঞ্জ, ধামরাই, কেরানীগঞ্জ ও সাভার উপজেলা। গাজীপুরের কালিয়াকৈর, কাপাসিয়া, গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর উপজেলা। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, লৌহজং, সিরাজদিখান, টঙ্গীবাড়ি ও শ্রীনগর উপজেলা। মানিকগঞ্জের সদর, সাটুরিয়া, দৌলতপুর ও সিংগাইর উপজেলা। নারায়নগঞ্জের নারায়নগঞ্জ সদর, আড়াইহাজার, বন্দর ও সোনারগাঁও উপজেলা। নরসিংদীর সদর, মনোহরদী, বেলাবো, পলাশ, রায়পুরা ও শিবপুর উপজেলা। টাঙ্গাইলের সদর, মধুপুর, মির্জাপুর, কালিহাতি, ঘাটাইল, সখীপুর, বাসাইল, ধনবাড়ী ও গোপালপুর উপজেলা। কিশোরগঞ্জের ভৈরব, হোসেনপুর, কাটিয়াদি ও পাকুন্দিয়া উপজেলা। ফরিদপুরের সদর, বোয়ালমারী, নগরকান্দা, সালথা, সদরপুর, ভাংগা ও মধুখালী উপজেলা। মাদারীপুরের শিবচর, কালকিনি, রাজৈর ও সদর উপজেলা। শরিয়তপুরের জাজিরা, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা, নড়িয়া, গোসাইরহাট ও সদর উপজেলা। রাজবাড়ীর সদর, গোয়ালন্দ, পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলা। গোপালগঞ্জের সদর, টুঙ্গিপাড়া, মুকসুদপুর, কোটালিপাড়া ও কাশিয়ায়ানী উপজেলা।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের অর্থনীতিতে ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর অবদান অন্য জেলারগুলোর চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি। এ বিভাগের অর্থনীতিকে আরও বেগবান ও ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। বর্তমানে পল্লী অঞ্চলে যাতায়াত সুবিধা বাড়ানোর ফলে রাজধানীসহ বড় বড় শহরের পাশে গ্রামীণ এলাকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এজন্য পল্লীসড়ক নেটওয়ার্কে যান চলাচলের সংখ্যা বেড়েছে এবং নিয়মিতভাবে ভারি যানবাহন চলাচল করছে। কাজেই এই সড়কগুলোর প্রশস্ততা ও অন্যান্য জ্যামিতিক মানে এগুলোর উন্নয়ন প্রয়োজন।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লীপ্রতিষ্ঠান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অধিক প্রশস্ত ও জ্যামিতিক মানে উন্নীত হবে। এতে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন হবে এবং কৃষিপণ্য পরিবহন ও বিপণন সহজ হবে।
সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম