৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৮:৫১
ডিস্ট্রিক্ট প্রতিনিধি
বরিশাল : দীর্ঘ ছয় বছর পর আগামী ৮ ফেব্রুয়ারী বরিশাল আসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ফিরে এখন উৎসবের নগরী বরিশাল। রং বেরংয়ের ব্যানার ফেস্টুন ও তোরণে বদলে গেছে বরিশাল নগরীর রূপ। সর্বত্র এখন সাজ সাজ রব।
সফরে এসে প্রথমে তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জের লেবুখালীতে পায়রা নদীর তীরে প্রায় এক হাজার ২০০ একর জমির ওপর শেখ হাসিনা সেনানিবাস’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
পরে বিকেলে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এখানে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল সফরকে সফল করতে এরইমধ্যে একাধিক কমিটি ও উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি কমিটি ও উপ-কমিটির সদস্যরা যার যার দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ করে সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটানোর জন্য কাজ করছেন নেতাকর্মীরা। প্রতিদিনই এসব কমিটির সদস্যরা ভিন্ন ভিন্নভাবে কোনো না কোনো স্থানে মিটিং ও কর্মিসভা করছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এসব সভা সমাবেশ করছেন তারা।
এরইমধ্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবং বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি জেলার ১০ উপজেলায় গিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। প্রতিদিনই তিনি পরিদর্শন করছেন জনসভাস্থল, দিচ্ছেন নানা দিকনির্দেশনা। দলের অন্য নেতারাও একাধিক প্রস্তুতি সভা করছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, জনসভাকে মহাসমাবেশে রূপ দিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে কাজ করছি। আমরাও দেখাতে চাই, বরিশালের সর্বস্তরের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে নগরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ। নগরীর বিভিন্নস্থানে ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো, তোরণ নির্মাণের কাজ চলছে পুরো দমে। সিটি করপোরেশেনর পক্ষ থেকেও শহর পরিষ্কার, ফুটপাতে রং করা, ভাঙা সড়ক সংস্কার করার কাজ চলছে।
দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় কমপক্ষে তিন লাখ লোক সমাগমের টার্গেট নিয়ে কাজ করছেন নেতাকর্মীরা। প্রতিটি উপজেলা থেকে নৌ ও সড়কপথে লোক আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরইমধ্যে গত ১১ জানুয়ারি জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যান জনসমুদ্রে পরিণত করার তাগিদ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু এমপি।
গত ২৭ জানুয়ারি জেলার বাবুগঞ্জে বর্ধিত সভা করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। ওইসভায় প্রতি উপজেলা থেকে ১০ হাজার কর্মী জনসভায় সমাগমের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পরদিন ২৮ জানুয়ারি যুবলীগের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় লাখো যুবলীগের কর্মী উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে জেলার মুলাদী, বানারীপাড়া, উজিরপুর, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, বাকেরগঞ্জ, হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জে একাধিক বিশেষ সভা করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গত এক সপ্তাহে চারটি কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) নির্বাচনী এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বরিশাল বিভাগ উন্নয়ক ফোরামের সভাপতি বিশিষ্ঠ সমাজসেবক ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল জানান, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখা হাসিনার বরিশালের জনসভা সফল করতে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক কাজ করছেন তিনি।
ভোলা-৪ আসনের এমপি বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, সাগরপাড়ের চরফ্যাশন-মনপুরা থেকে হাজার হাজার লোক জনসভায় যোগ দেবেন। পিরোজপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ বলেন, আমার জেলা থেকে লঞ্চ ও বাস বোঝাই করে নেতাকর্মীরা জনসভায় যোগ দেবে। একইভাবে পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও বরগুনা থেকেও লোক সমাগমে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে ওইসব জেলার শীর্ষ নেতারা নিশ্চিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর জনসমাবেশকে ঘিরে পাঁচটি স্থানে দায়িত্ব পালন করবে এক হাজার ৬৮ জন পুলিশ সদস্য। এছাড়া বরিশাল শহরকে ব্যাপকভাবে নজরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জনসভার দিন মেডিকেল ও সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে চারটি মেডিকেল টিম, চারটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হবে। সিটি কর্পোরেশন থেকে ছয়টি পয়েন্টে ১২টি পানির ট্যাংকে দুইহাজার লিটার পানিসহ সার্কিট হাউজ ও জনসভাস্থলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য দুইটি জেনারেটর প্রস্তুত রাখা হবে।
সারাবাংলা/একে