বড়পুকুরিয়া কেন্দ্রের জন্য ৮ লাখ টন কয়লা আমদানি করতে চায় পিডিবি
১৮ জুলাই ২০১৯ ০০:১৪
ঢাকা: বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৮ লাখ মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। কয়লাভিত্তিক এই কেন্দ্রের জন্য ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছরের জন্য এই পরিমাণ কয়লা লাগবে। দেশীয় কোম্পানি বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ এই পরিমাণ কয়লা সরবরাহে অক্ষম বলে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। আমদানির অনুমতির জন্য সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে পিডিবি। পিডিবি ও বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানান।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ এ প্রসঙ্গে সারাবাংলা’কে জানান, বড়পুকরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আগামী তিন বছরে কি পরিমাণ কয়লা লাগবে তার প্রাক্কলন করা হয়েছে। এই প্রাক্কলন অনুযায়ী আগামী তিন বছরে এই কেন্দ্রের জন্য ৮ লাখ টন কয়লা ঘাটতি থাকবে।
তিনি জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি কর্তৃপক্ষ এই কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ করলেও পুরোটা করতে পারবে না। সে কারণে ঘাটতি ৮ লাখ মেট্রিক টন কয়লা আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখন সরকারের অনুমতি পেলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
সংশ্লিষ্টরা কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দৈনিক পাঁচ হাজার দুইশ মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন হয়। এই হিসেবে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রের জন্য ৩১ লাখ ২৯ হাজার মেট্রিক টন কয়লা লাগবে। এর মধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করতে পারবে ২০ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। চাহিদার বাকি আট লাখ মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করতে হবে।
এর আগে এই কেন্দ্রের জন্য পিডিবি এক লাখ মেট্রিক কয়লা আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবানের বিপরীতে নির্বাচিত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কয়লার দাম আর্ন্তজাতিক বাজার থেকে অনেক বেশি ধরে প্রস্তাবনা জমা দেয়। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে দাম বেশি হওয়ার কারণে ওই দরপত্র প্রক্রিয়া বিদ্যুৎ বিভাগ বাতিল করে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এই কেন্দ্রের জন্য পিডিবিকে বড়পুকুরিয়া কোলমাইন কোম্পানি লিমিটেড প্রতি টন কয়লা সরবরাহ করে ১৩০ মার্কিন ডলারে। সেখানে ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি টন কয়লা মূল্য ধরে ২৮২ দশমিক ৯১ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে এফওফি (ফ্লাইটস এন্ড বোর্ড) মূল্য ১১৮ মার্কিন ডলার, ফ্রেইট মূল্য ৭ মার্কিন ডলার এবং স্থানীয় পরিবহন ব্যয়, ট্রান্সশিপমেন্ট লোডিং ও আনলোডিং ও ইন্সুরেন্স ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৭ দশমিক ৪৭ মার্কিন ডলার।
২০১৮ সালে বড়পুকরিয়া কয়লা খনির ভেতরের কোলইয়ার্ড থেকে এক লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা চুরির ঘটনা ঘটে। এর ফলে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে কয়লা সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কয়লা সরবরাহ না থাকার কারণে ২০১৮ সালের ২২ জুলাই কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় পিডিবি। পরে ২০১৮ সালের ১৩ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি জরুরি ভিত্তিতে চালু করতে কয়লা আমদানির জন্য বলেন। ওই সময় এক লাখ টন কয়লা আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। যা আর্ন্তজাতিক বাজার থেকে অনেক বেশি দাম হওয়ার কারণে বাতিল করা হয়।
সারাবাংলা/এইচএ/জেএএম