ফুটপাত থেকে শিশু উদ্ধার, ২ ভিক্ষুক আটক
১৭ জুলাই ২০১৯ ২২:২১
ঢাকা: রাজধানীর শিক্ষাভবনের সামনের ফুটপাত থেকে ৭ মাস বয়সী মেয়ে শিশু উদ্ধার করেছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) সুলতানা ইশরাত জাহান শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নিয়ে যান। এসময় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দেওয়া দুই ভিক্ষুককে আটক করা হয়।
এএসপি সুলতানা ইশরাত জাহান সারাবাংলাকে বলেন, সন্ধ্যার দিকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে শিক্ষাভবনের সামনে দিয়ে রাজারবাগ যাচ্ছিলাম। এ সময় দেখতে পাই শিক্ষা ভবনের সামনে ফুটপাতে একজন নারী ও পুরুষ একটি শিশুকে কোলে নিয়ে ভিক্ষা করছে। তাদের দেখে সন্দেহ হলে গাড়ি থেকে নেমে তাদের বাচ্চার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। এসময় তারা শিশুটিকে নিজেদের সন্তান বলে দাবী করে। পরে শিশুটির পিঠে পোড়া ক্ষত দেখতে পাই। এতে সন্দেহ হলে শাহবাগ থানায় ফোন দেই।
এএসপি ইশরাত জাহান বলেন, দুই ভিক্ষুককে ত আটক করে শিশুটিকে হাসপাতালে নিই। নিজের বাচ্চা হলে তো এভাবে অসুস্থ বাচ্চাকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতে পারতো না এরা। হাসপাতালে আসার পর ওই নারী সাথে কথা বলে জানতে পারি তার নাম জোসনা বেগম (৪০) ও তার সাথে থাকা লোকটি তার স্বামী- জহুরুল। তারা হাইকোর্ট এলাকায় থাকে। শিক্ষা ভবনের সামনে বাচ্চাকে নিয়ে ভিক্ষা করে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক জোসনা বেগম জানিয়েছেন, এটা তাদের বাচ্চা না। একটি মেয়ে ৫ দিন বয়সী বাচ্চাটি তাদের কাছে দিয়ে পালিয়ে গেছে। তারপর থেকে বাচ্চাটি তাদের কাছেই থাকে। মহিলার কথা শুনে আরও সন্দেহ হয়েছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা ইশরাত।
এদিকে, আটক ভিক্ষুক জহুরুলের কাছে শিশুটির কথা জিজ্ঞাস করলে বলেন, বাচ্চা আমার ছোট স্ত্রীর। বাচ্চার নাম জেসমিন। চার মাস আগে বাচ্চাটি কাছে রেখে অন্যত্র চলে যায় সে। তারপর থেকে বাচ্চাটি দেখাশুনা করছি আমরা। বাচ্চাটির অসুস্থের কথা জিজ্ঞাস করলে বলেন, আমরা বুঝি নাই। শিশুটির পিঠে ক্ষতের কথা জিজ্ঞাস করলে জহুরুল জানান বৈদ্যুতিক শক লেগে পুড়ে গেছে।
এএসপি ইসরাত জাহান আরও বলেন, বাচ্চাটিকে দেখে খুবই খারপ লাগছে। বিভিন্ন সময় দেখি বাচ্চা চুরি করে ভিক্ষাবৃত্তি করে। এদেরকে দেখে সেই সন্দেহ হয়েছে। চিকিৎসকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি বাচ্চাটির শ্বাসকষ্টসহ অনেক রোগে আক্রান্ত। ঢাকা মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসকরা শিশুটিকে মহাখালী সংক্রামকব্যাধী হাসপাতালে নিতে বলেছেন। এখন সেখানে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের আগে দায়িত্ব শিশুটিকে সুস্থ করে তোলা। তারপর তদন্ত করে দেখা হবে বাচ্চাটি আসলে তাদের নাকি চুরি করেছে। স্বামী -স্ত্রী পরিচয় দেওয়া দুজনকে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
সারাবাংলা/এসআর/জেডএফ